ছেলেদের কাছে যাবেন না বৃদ্ধ দম্পতি, উঠবেন মেয়ের বাড়ি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চাঁপাইনবাবগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৯:১৩ এএম, ০৬ মে ২০২৩
বৃদ্ধ দম্পতি শেরিনা বেগম (৮৫) ও দাহারুল ইসলামে মেয়ের বাড়িতে ওঠার সিদ্ধান্ত নেন

অবশেষে মেয়ের বাড়িতে ঠাঁই মিলেছে বৃদ্ধ দম্পতি শেরিনা বেগম (৮৫) ও দাহারুল ইসলামের (৯০)। কয়েক দফা আলাপের পর মেয়ের বাড়িতে তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দেন শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবুল হায়াত।

শুক্রবার (৬ মে) রাত ১০টায় উপজেলায় কানসাট ইউনিয়নের কাজিপাড়া গ্রামে দাহারুল ইসলামের বন্ধু আমিনুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দাহারুল ইসলামের সন্তানদের নিয়ে বসে এ সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া ছেলেদের কাছে যে অর্থ-সম্পদ ছিল, তা ফেরত নিয়ে দাহারুল ইসলামের নামে ব্যাংকে রাখারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

দাহারুল ইসলাম বলেন, আমার সাত ছেলে-মেয়ে। তারা সবাই প্রতিষ্ঠিত। তবে কিছুদিন আগে থেকেই তাদের সঙ্গে আমার মনোমালিন্য চলছিল। এজন্যই তারা আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। মূলত এ রেষারেষির কারণ অর্থ-সম্পদ। আমি তো সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কোনদিন আর ছেলেমেয়েদের কাছে যাবো না। কিন্তু ইউএনওসহ আশপাশের মানুষ সবাই আমাকে ছেলে মেয়েদের কাছেই থাকতে বলছে। তাই রাজি হয়েছি। তবে আমি ছেলেদের কাছে যাবো না। তাই মেজ মেয়ের কাছে থাকতে রাজি হয়েছি।

cha

আরও পড়ুন: ৭ সন্তানই প্রতিষ্ঠিত, তবুও বাড়ি ছাড়তে হলো বৃদ্ধ বাবা-মাকে

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও আবুল হায়াত জাগো নিউজকে বলেন, বৃদ্ধ দাহারুলের ছেলেমেয়েদের নিয়ে বসেছিলাম। ছেলেদের কাছে যে অর্থ-সম্পদ ছিল তা ফেরত নিয়ে বৃদ্ধ দাহারুলের নামে ব্যাংকে রাখা হবে। এর জন্য তার সন্তানদের আমি নির্দিষ্ট সময় দিয়েছি। এ সময়ের মধ্যেই সব অর্থ-সম্পদ বৃদ্ধকে ফেরত দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সবার সঙ্গে কথা বলে যা বুঝলাম, অর্থ-সম্পদ নিয়েই দাহারুলের সন্তানদের মধ্যে ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। এটি একটি ভুল বোঝাবুঝি। এখন সব সন্তানই তার বাবা-মাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন। তবে বৃদ্ধ দম্পতি ছেলেদের বাড়িতে যেতে আগ্রহী নয়। তাই মেজ মেয়ের বাড়িতে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ইউএনও বলেন, দাহারুলের মেজ মেয়ে স্কুল শিক্ষিকা। তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি তার বাবা-মাকে সারা জীবন সঙ্গে রাখতে চান। তাই তার বাড়িতে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে ছেলেরাও আমাকে কথা দিয়েছে সব সময় তার বাবা-মায়ের খোঁজ রাখবে।

cha

এর আগে বুধবার উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের কামাটোলা বাবুপুর গ্রামে তার নিজ বাড়ি থেকে ওই বৃদ্ধ দম্পতিকে বের করে দেন সন্তানরা। নিরুপায় হয়ে উপজেলার পুকুরিয়া এলাকায় বাল্যকালের বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেন তারা।

খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে সেখানে গিয়ে তাদের খোঁজ নেন ইউএনও আবুল হায়াত। এ সময় ইউএনওর সঙ্গে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার দাস ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী আরিফুল ইসলামও ছিলেন।

সোহান মাহমুদ/এসজে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।