সরকারি ঘর পেতে আওয়ামী লীগ নেতাকে দেওয়া টাকা ফেরত পেলেন ৫ নারী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নাটোর
প্রকাশিত: ১০:৩৩ এএম, ০৬ মে ২০২৩
ফেরত পাওয়া টাক নিয়ে ইউএনওর বাসভবনের দেওয়াল টপকে আসেন আসমা বেগম

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেওয়ার নামে আওয়ামী লীগ নেতার নেওয়া টাকা ফেরত দিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্রাবণী রায়।

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সকালে অভিযোগকারীদের তার বাসভবনে ডেকে ওই টাকা ফেরত দেন তিনি। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অভিযোগকারী আসমা বেগম, ইঞ্জিরা বেগম, রাবিয়া বেগম, রিজিয়া বেগম, হাবিয়া বেগম, সাহারা বেগম ও মমতাজ বেগমকে ইউএনও তার বাসভবনে ডেকে নেন। সেখানে দীর্ঘ সময় ধরে অভিযোগকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

এদিকে টাকা ফেরত দেওয়ার খবরটি ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা ইউএনওর বাসভবনের সামনে অবস্থান করেন। এ বিষয়ে ইউএনওর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। দুপুর ২টার দিকে তার বাসভবনের পেছনের প্রাচীরে মই বেঁধে সেখান দিয়ে নামিয়ে দেওয়া হয় ভুক্তভোগী নারীদের।

টাকা ফেরত পেয়ে বাড়ি ফেরার পথে গুরুদাসপুর থানা মোড়ে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা হয় ওই অভিযোগকারী নারীদের। তারা ফেরত পাওয়া টাকার বান্ডিল দেখান।

Na-(2).jpg

তাদের অভিযোগ, গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নিয়েছিলেন। এ টাকা ফেরত পেতে বুধবার সাহারা খাতুন ও মমতাজ বেগম বাদী হয়ে নাটোর আমলি আদালতে মামলা করেন। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও জেলা প্রশাসকের নজরে আসে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নূর মোহম্মদ মাসুম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে অভিযোগকারীদের শুনানি করেন। এ সময় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন না। শুনানিতে ইউএনও শ্রাবনী রায় ছাড়াও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান শাকিল উপস্থিত ছিলেন।

ভুক্তভোগী নারীরা আরও জানান, শুনানির পর বৃহস্পতিবার রাতে অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিজের ভুল স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করে এসেছেন। তাদের টাকা ইউএনওর মাধ্যমে ফেরত পাবেন বলেও জানান। ইউএনও শ্রাবনী রায় বৃহস্পতিবার রাতে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য মোবাইল করে শুক্রবার তার সরকারি বাসভবনে আসতে বলেছিলেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা সেখানে গেলে বিষয়টি গোপন রাখার শর্তে অভিযোগকারী সাতজনের মধ্যে চারজনকে ৫০ হাজার টাকা করে এবং একজনকে ৪০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। তবে সাহারা বেগম ও মমতাজ বেগম এখনো টাকা ফেরত পাননি।

টাকা ফেরত পাওয়া নারী আসমা বেগম বলেন, ‘সাংবাদিকদের দৃষ্টি এড়াতে ইউএনওর পরামর্শে তার গাড়িচালক জয়নাল হোসেনের সহায়তায় টাকাসহ মই বেয়ে প্রাচীর টপকেছেন।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলামের মোবাইল নম্বরে কল দিলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

শুক্রবার বিকেলে ইউএনও শ্রাবনী রায় বলেন, ভুক্তভোগীরা আমার কাছে অভিযোগ করেন। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আমি বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি মাত্র।

রেজাউল করিম রেজা/এসজে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।