এসএসসি পরীক্ষা

পরিচয় গোপন করে মেয়ের কেন্দ্রে হল সুপার বাবা!

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নড়াইল
প্রকাশিত: ০৯:১৩ পিএম, ১৩ মে ২০২৩

নড়াইল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে শিবানা খাতুন। তবে পরীক্ষা শুরুর দিন থেকেই পরিচয় গোপন করে ওই কেন্দ্রে হল সুপারের দায়িত্ব পালনের অভিযোগ উঠেছে তার বাবা শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শরিফুল ইসলাম নড়াইল সদর উপজেলার আরবিএফএম ভবানীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তার মেয়ে শিবানা নড়াইল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। ওই কেন্দ্রে হল সুপারের দায়িত্ব পালন করছেন শরিফুল ইসলাম।

অভিযোগ উঠেছে, নিয়মিতভাবে প্রতিটি পরীক্ষার দিন শরিফুল ইসলাম মেয়ে শিবানা খাতুনের কক্ষে গিয়ে তাকে সহযোগিতা করেন। এমনকি নিজের পছন্দের শিক্ষককে ওই কক্ষে ডিউটি দিয়ে মেয়েকে সহযোগিতা করান তিনি। গণিত পরীক্ষার দিন শরিফুল ইসলাম মেয়েকে সহযোগিতা করার জন্য নিজ বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষককে ওই কক্ষে ডিউটি দেন।

এ বিষয়ে নড়াইল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফিরোজ কিবরিয়া বলেন, শিবানা খাতুন নড়াইল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে ১১৪ নম্বর রুমে পরীক্ষা দিচ্ছে। প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম মেয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রেই হল সুপারের দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি মেয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নে প্রধান শিক্ষক ফিরোজ কিবরিয়া বলেন, এ ধরনের দায়িত্ব পালনের কোনো সুযোগ নেই। প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম মেয়ে শিবানার পরীক্ষা দেওয়ার তথ্য গোপন করেই হল সুপারের দায়িত্ব নিয়েছেন।

জানতে চাইলে আরবিএফএম ভবানীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও নড়াইল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের হল সুপার শরিফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, তার কোনো মেয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে না।

তাহলে ১১৪ নম্বর কক্ষে গিয়ে শিবানা নামের মেয়েটিকে সাহায্য করেন কেন, পছন্দের শিক্ষকদের ওই কক্ষে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ডিউটি দিয়ে মেয়েটিকে সাহায্য করান কেন, এসব প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ওই মেয়েটি তার বন্ধুর মেয়ে।

তাহলে ওই মেয়ের প্রবেশপত্রে আপনার নাম লেখা কেন, এমন প্রশ্নে নির্বাক থাকেন শরিফুল ইসলাম। পরে এ বিষয়ে কোনো কিছু না করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।

নড়াইল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব নাসির উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রথম দিকের তিনটি পরীক্ষায় হল সুপার শরিফুল ইসলাম মেয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়েছিলেন, এটা সত্য। তাকে নিষেধ করার পরে আর যাননি।

মেয়ের পরীক্ষার কেন্দ্রে তিনি হল সুপার থাকতে পারেন কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আগামী পরীক্ষাগুলো থেকে তাকে সাসপেন্ড করা হবে।

নড়াইল সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম সুলতান মাহমুদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম কোনোভাবেই মেয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে হল সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’

jagonews24

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হায়দার আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিষয়টি জানা ছিল না। কেন্দ্র সচিবকে জানানো হবে। ঘটনার সত্যতা পেলে তাকে বরখাস্ত করা
হবে।’

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি কেন্দ্র সচিবকে জানিয়ে তার বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

হাফিজুল নিলু/এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।