ছাত্রীদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে না দেওয়ায় কলেজছাত্রকে নির্যাতন

ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার ইকবাল মেমোরিয়াল সরকারি কলেজের এক ছাত্রকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। এ ঘটনায় রোববার (৪ জুন) রাতে দাগনভূঞা থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা।
সহপাঠী ছাত্রীদের মোবাইলফোন নম্বর সংগ্রহ করে না দেওয়ায় ওই ছাত্রকে নির্যাতন করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। খবর পেয়ে সোনাগাজী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তসলিম হোসাইন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ মে দুপুরে কলেজের তৃতীয় তলার স্কাউট কক্ষে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মেহেদী হাসানকে ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে একটি চেয়ারে বসিয়ে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুসি, লাথি, চড়-থাপ্পড় দিয়ে সিগারেটের আগুন দিয়ে আঙুলে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়।
তাকে শ্বাসরোধে হত্যার হুমকি দিয়ে পকেটে থাকা ১ হাজার ১০০ টাকা নিয়ে নেওয়া হয়। ঘটনাটি কলেজের কয়েকজন ছাত্র টের পেয়ে এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় ঘটনাটি নিয়ে মুখ না খুলতে হুমকি-ধামকি দেন তারা। ছেলেকে নির্যাতনের ঘটনায় মমতাজ বেগম বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে আরও চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় মামলা করেন।
মামলায় উপজেলার অভিরামপুর এলাকার বেলায়েত হোসেনের ছেলে তৌসিফ (১৮), গনিপুর এলাকার মনছুরের ছেলে সোহান (১৮), উদরাজপুর এলাকার বেলাল হোসেনের ছেলে মিঠু (১৮), সেনবাগের বিজবাগ ইউনিয়নের শ্যামেরাগাঁও এলাকার মো. হাবিবের ছেলে রানা (১৮) ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরপার্বতী গ্রামের সামিরকে (১৮) আসামি করা হয়।
মামলার বাদী মমতাজ বেগম বলেন, মেহেদীর কাছে বেশ কিছুদিন ধরে একাদশ শ্রেণির ছাত্রীদের ফোন নম্বর চেয়েছে অভিযুক্তরা। নম্বর না দেওয়ায় তাকে এমন নির্যাতন করা হয়েছে। তাকে উদ্ধারের পর দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ইকবাল মেমোরিয়াল সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনজুরুল হক বলেন, ছাত্র নির্যাতনের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান ইমাম মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ কলেজ পরিদর্শন করেছে। অভিযুক্তদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
আবদুল্লাহ আল-মামুন/এমআরআর/এএসএম