ধর্ষণ মামলা
মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ঝর্ণার ছেলেসহ ২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় হওয়া ধর্ষণ মামলায় হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ১০ম দফায় কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী ঝর্ণার ছেলেসহ দুজনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ জুন) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে এ সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। ৮ আগস্ট পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন তিনি।
সাক্ষ্যদাতারা হলেন- মামলার বাদী কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার ছেলে আব্দুর রহমান ও সাংবাদিক এনামুল হক বিদ্যুৎ। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।
আরও পড়ুন: মামুনুল আমার সঙ্গে অন্যায় করেছে, আমি তার বিচার চাই : ঝর্ণা
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ কে এম ওমর ফারুক নয়ন জাগো নিউজকে বলেন, সাক্ষীরা যে সাক্ষ্য দিয়েছেন তাতে প্রমাণ হয় না মামুনুল ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সাক্ষী আব্দুর রহমান বলেছেন মা ঝর্ণার সঙ্গে তার বাবার বিচ্ছেদ হয়। তার বাবার সঙ্গে মামুনুল হকের ভালো সম্পর্ক ছিল। বিচ্ছেদের পর ঢাকায় মা ঝর্ণার সঙ্গে মামুনুল হকের বিয়ে হয়।
ওমর ফারুক নয়ন আরও বলেন, ঝর্ণার ছেলে আব্দুর রহমান সাক্ষী দেওয়ার পর আদালতে তার নিরাপত্তা চেয়েছেন। আর এতেই প্রমাণিত হয় জান্নাত আরা ঝর্ণা মামুনুল হকের দ্বিতীয় স্ত্রী। আশা করি আদালতের রায়ে মামুনুল হক বেকসুর খালাস পাবেন।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে দুজনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। সাক্ষীরা সবাই বলেছেন মামুনুল ধর্ষণের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আদালতে মুখোমুখি মামুনুল-ঝর্ণা
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়েছিল মামুনুল হককে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে আবার কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। একইসঙ্গে আদালতপাড়া জুড়ে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে আবার কাশিমপুর কারাগারে নেওয়া হয়।
২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় মামুনুল হকের উপস্থিতিতে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার সাক্ষ্য নেন আদালত। একই সঙ্গে ওই বছরের ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলায় বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেওয়া হয়।
২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে তাকে ঘেরাও করেন। পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ব্যাপক ভাঙচুর করেন এবং তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান।
ঘটনার পর থেকেই মামুনুল হক মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় অবস্থান করে আসছিলেন। এ সময় পুলিশ তাকে নজরদারির মধ্যে রাখে। এরপর গত ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় মামুনুলকে। পরে এই ঘটনায় ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা করেন ওই নারী। তবে ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক।
মোবাশ্বির শ্রাবণ/এসজে/এএসএম