৩০ হাজার টাকার জন্য দু’বছর আটকে আছে ইলমার টনসিল অপারেশন

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মাদারীপুর
প্রকাশিত: ০৮:০৪ পিএম, ০৬ জুন ২০২৩

ছোটবেলায় বাবা মারা গেছেন। মা অনেক কষ্ট করে মেয়েকে পড়াশুনা করাচ্ছেন। ক্লাসে তার রোল নম্বর ১। কিন্তু টনসিলের ব্যথায় এক মাস ধরে মাদরাসায় যেতে পারছে না ইলমা আক্তার। ডাক্তার দুই বছর আগে অপারেশন করাতে বললেও এখন পর্যন্ত টাকা যোগাড় করতে পারেনি তার পরিবার। এতে ইলমার যেমন কষ্ট হচ্ছে তেমনি পড়াশুনাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের নয়াচর এলাকার কাওছার হোসেন ছোট ছোট দুই মেয়েকে রেখে ২০১৫ সালে লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তার চিকিৎসার জন্য জমি-জমা বিক্রি করে একেবারে নিঃস্ব হয়ে যায় পরিবারটি। এরপর থেকে মা পরশমনি অনেক কষ্ট করে দুই মেয়েকে পড়াশুনা করাচ্ছেন। বড় মেয়ে জয়নুর আক্তার এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। ছোট মেয়ে ইলমা আক্তার মাদারীপুর সদর উপজেলার তালতলা মঠখোলা এলাকার খানবাড়ি মহিলা মাদরাসায় মাওলানা বিভাগের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। ক্লাসে তার রোল নম্বর ১। সব সময় পড়াশুনার প্রতি তার আগ্রহ।

কিন্তু হঠাৎ প্রায় দুই বছর আগে প্রচণ্ড গলাব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে শহরের একটি ক্লিনিকে ডাক্তারের কাছে নেওয়া হয়। তখন সেই ডাক্তার ইলমাকে অপারেশন করাতে বলেন। আর এরজন্য প্রয়োজন ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু সেই টাকা তার পরিবার যোগাড় করতে পারেনি। তাই ইলমার অপারেশনও হয়নি। একমাস আগে গলায় প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে মাদরাসা থেকে বাড়িতে ফিরে আসে সে। খেতেও পারে না ঠিকমতো। তাই দ্রুত অপরারেশন দরকার। কিন্তু তার মা পরশমনির পক্ষে টেইলারিংয়ের কাজ করে এই টাকা যোগাড় করা সম্ভব না। তাই তিনি সবার সহযোগিতা চেয়েছেন।

ইলমার মা পরশমনি বলেন, আমি টেইলারিংয়ের কাজ করি। তা দিয়ে ঠিকমতো খাবারই খেতে পারি না। সেখানে মেয়েকে কিভাবে অপারেশন করাবো। মেয়ের অনেক কষ্ট হচ্ছে। ঠিকমতো খেতেও পারে না। দুই বছর আগে ডাক্তার ৩০ হাজার টাকার কথা বলেছিলেন। এখন হয়তো আরও বেশি লাগবে। কোথায় পাবো এতগুলো টাকা। সবাই একটু সহযোগিতা করলে হয়তো আমার মেয়ের অপারেশন করাতে পারবো।

অসুস্থ ইলমা জানায়, আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে। খেতেও পারি না। জানি না আমার অপারেশন হবে কিনা।

প্রতিবেশী পাপিয়া, রাহিলা ও সীমা বলেন, ইলমার মা সারাদিন মেশিনে জামা কাপড় সেলাই করে যা পান তা দিয়ে ঠিকমতো সংসারই চলে না। সেখানে এতগুলো টাকা কীভাবে যোগাড় করবে।

মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাইনউদ্দিন বলেন, সমাজসেবা থেকে অসহায় ও গরিবদের চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা করা হয়। তারা যদি সমাজসেবায় একটি দরখাস্ত করেন তাহলে আমি শিশুটির চিকিৎসার জন্য কিছুটা সহযোগিতার ব্যবস্থা করে দিতে পারবো।

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।