কাপ্তাই হ্রদ

নৌ চলাচল সচল রাখতে যুবকদের উদ্যোগ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি রাঙ্গামাটি
প্রকাশিত: ১০:৫৫ এএম, ১১ জুন ২০২৩

পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির বরকল উপজেলায় যাতায়াতের একমাত্র পরিবহন ব্যবস্থা হলো নৌযান। কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে যাওয়ায় ডুবোচরে ইঞ্জিন চালিত বোটগুলো প্রায় সময় আটকে পড়ে যায়। এতে করে বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে নৌচলাচল।তাই স্থানীয় যুবকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বোট আটকে পড়া জায়গায় মাটি খনন করে বোটগুলো ঠেলে পাড় করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।

সরেজমিনে দিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় ২০-২৫ জন যুবক মিলে শিলার ডাক নামক এলাকায় ডুবোচরে আটকে পড়া বোটগুলো ঠেলে এপাড় থেকে ওপাড় পাড় করে দিচ্ছে। বিনিময়ে যাত্রীবাহী বোটের চালকরা তাদের ২০, ৩০, ৫০ টাকা করে দিচ্ছে।

স্থানীয় যুবক সুনয়ন চাকমা বলেন, এখানে ডুবচর থাকায় প্রায় বোর্ট আটকে যায় এতে যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হতো। যার কারণে অনেক সরকারি কর্মচারী ঠিকমতো অফিসে পৌঁছাতে পারতো না। তাই আমরা স্থানীয় যুবকরা মিলে নিজেরা উদ্যোগ নিয়েছি এ রাস্তায় যে সব বোর্ট আটকে যাবে সেগুলোকে ঠেলে পার করে দিবো।

আরও পড়ুন: হ্রদে পানি কমে নৌ চলাচল ব্যাহত, পর্যটক কমেছে রাঙ্গামাটিতে

আরেক যুবক নিবারণ চাকমা বলেন, সাধারণ মানুষের যোগাযোগের কষ্টের বিষয়টি বিবেচনা করে প্রায় ২০ দিন ধরে আমরা এ কাজ করে আসছি। সরকারি চাকুরিজীবি, রোগীদের বোর্টগুলোকে আমরা বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি। আমরা কারো কাছে চেয়ে কোন টাকা আদায় করি না। তারা যদি খুশি হয়ে কিছু দেয় তাই আমরা সবাই মিলে ভাগ করে নেই।

Rangamati

বোট চালক জয়সেন তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, হ্রদের পানি কমে যাওয়ায় ডুবোচরে প্রায় সময় বোর্ট আটকে যায়। এতে করে আমাদের বেশ কষ্ট হয়ে পেড়েছে ডুবোচর দিয়ে বোর্ট চালানো। শিলার ডাক এলাকার যুবকরা সুন্দর একটি কাজ করছে। তারা ডুবোচর এলাকায় বোর্ট ঠেলে পার করে দিচ্ছে। এতে করে আমাদের কষ্টও যেমন কম হচ্ছে তেমনি যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না।

আরও পড়ুন: একদিনেই ঘুরে আসুন শতবর্ষী রায়বাড়ির দুর্গামন্দিরে

বোর্টের যাত্রী শিক্ষক রিতা চাকমা বলেন, আমি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রোজ এ নৌপথ দিয়ে স্কুলে যেতে হয়। ডুবোচরে বোর্ট আটকে প্রতিদিন ঘণ্টা-দেড়ঘণ্টা সময় ব্যয় হতো এখানে। কিন্তু যুবকদের এ উদ্যেগের ফলে এখন সে সময়টা আর ব্যয় হয় না সময় মতো স্কুলে পৌঁছাতে পারি।

বালুখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অমর কুমার চাকমা যুবকদের এ কর্মকাণ্ডকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, সুবলং ইউনিয়ন আর বালুখালী ইউনিয়নের মাঝখানে যে ডুবোচর উঠেছে সেখানে অনেক মালামাল ও যাত্রীবাহী বোটগুলো আটকে যাওয়ার বিষয়টি যখন আমার নজরে আসে। তখন আমি আমার এলাকাবাসীকে অনুরোধ করেছি যেন তারা সেখানে মানবিক সহায়তা দেয় এবং কোন প্রকার জোরপূর্বক টাকা না নেয়। যদি কেউ বকশিস দেয় তখন যেন নেয়। এলাকাবাসীরা আমার কথায় সাড়া দিয়ে সেখানে তারা নিরলসভাবে মানবিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। তারা আমার ডাকে সারা দিয়ে যে কাজটা করে যাচ্ছে এতে তাদের আর্থিক ভাবে স্বল্প আয় হলেও মানুষের দোয়া পাচ্ছে।

আরও পড়ুন: বাঘাইছড়িতে ডায়রিয়া রোধে বিজিবির মেডিকেল ক্যাম্পেইন

রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর বলেন, কাপ্তাই হ্রদসহ সংশ্লিষ্ট শাখা সমূহ ড্রেজিংয়ের জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সেটি বাস্তবায়ন হলে নাব্যতাসহ অন্যান্য সংকট কেটে যাবে। এই এলাকার মানুষের যোগাযোগের দুর্ভোগ কমে আসবে।

সাইফুল উদ্দীন/জেএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।