থাকার ঘর নেই, রাত হলে মেয়েকে অন্যের বাড়িতে রেখে আসেন হালিমা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নাটোর
প্রকাশিত: ১০:০৪ এএম, ২০ জুন ২০২৩

‘আমার জায়গা-জমি নাই। ছোটবেলায় মাকে হারিয়েছি। সে কষ্ট বুকে নিয়ে এতিম অসহায়কে বিয়ে করেছি। সরকার ঘর দিচ্ছে। যাদের টাকা-ঘর আছে, জমি আছে তারা ঘর পাইছে। ইউএনওর পা ধরে আমার বউ কেঁদেছে তারপরও একটি ঘর দিলো না।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন নাটোরের লালপুর উপজেলার বিলমাড়ীয়া ইউনিয়নের মোহরকয়া গ্রামের বাসিন্দা লালন সরদার। তার মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে একটি ছাপরা ঘরে থাকছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লালপুর উপজেলার বিলমাড়ীয়া ইউনিয়নের মোহরকয়া গ্রামে মা-বাবা হারা হালিমা বেগমের বিয়ে হয় লালন সরদারের সঙ্গে। ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় জন্ম নেওয়া হালিমা বেগম ছোটবেলায় মা-বাবাকে হারিয়ে অন্যের বাসাবাড়িতে কাজ করে বড় হয়েছেন। অন্যদিকে লালন সরদারও ছোটবেলায় মাকে হারিয়ে সৎমায়ের ঘরে বড় হয়েছেন। ঢাকায় রাজমিস্ত্রির কাজে গিয়ে ১৩ বছর আগে বিয়ে করেন হালিমাকে।

লালন-হালিমা দম্পতির দুটি মেয়ে রয়েছে। বড় মেয়ে লামিয়া এবার ষষ্ঠ শ্রেণি আর ছোট মেয়ে সুমাইয়া শিশু শ্রেণিতে পড়ছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় কয়েকটি ধাপে ভূমিহীনদের মধ্যে ঘর হস্তান্তর করা হলেও ঘর পাননি এ দম্পতি।

হালিমা বেগম বলেন, ‘শ্বশুরের একটি ছাপরা ঘরের সঙ্গে তিনটা টিন বেঁধে কোনোরকম থাকি। রাতে বড় মেয়েকে অন্যের বাড়িতে রেখে আসি। কষ্টে রাত আসলে মনে হয় আত্মহত্যা করি।’

এ বিষয়ে বিলমাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ছিদ্দিক আলী বলেন, আগামীতে সুযোগ পেলে অসহায় পরিবারটির জন্য ঘর বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হবে।

তবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা সুলতানার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

রেজাউল করিম রেজা/এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।