কাপ্তাই হ্রদের বুকে রেস্টুরেন্ট ‘দোল’

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি রাঙ্গামাটি
প্রকাশিত: ১০:১৭ এএম, ০৯ জুলাই ২০২৩

পাহাড় আর হ্রদের মিতালি দেখতে দূর দুরন্ত থেকে পর্যটকেরা ছুটে আসেন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে। পর্যটকদের প্রিয় জায়গা হচ্ছে সুবিশাল কাপ্তাই হ্রদ। এখন সে হ্রদের বুকে খোলা হয়েছে ভাসমান রেস্টুরেন্ট ‘দোল’। পর্যটন নগরী হিসেবে রাঙ্গামাটিতে বিভিন্ন ধরনের রেস্টুরেন্ট থাকলেও হ্রদের পানির উপরে ভাসমান রেস্তোরা এটাই প্রথম।

শহরের শহীদ মিনার ঘাটে এই রেস্টুরেন্টের অবস্থান। খোলা থাকে সপ্তাহের সাতদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। কাপ্তাই হ্রদের বুকে ভ্রমণ করতে করতে খাবারের আনন্দ উপভোগের এই অভিনব আয়োজনকে স্বাগত জানিয়েছে পর্যটকসহ স্থানীয়রা।

দোল রেস্টুরেন্টটি কাপ্তাই হ্রদের বুকে চলাচলকারী বড় বোটগুলোর আদলেই তৈরি করা। দ্বিতল এই বোটের উপরের তলাটি রেস্টুরেন্ট এবং নিচের তলাটি কিচেন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। উপরের তলার রেস্টুরেন্টের মুগ্ধকর সাজসজ্জা নজর কাড়বে সবার। বাঁশের তৈরি আসবাবপত্র, পেছনের দিকের বসার স্থান ও আলোকসজ্জা বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে এই রেস্টুরেন্টে। উপরের তলাটি খোলামেলা হওয়াতে হ্রদের বুকে ভাসমান অবস্থায় খাবার খেতে খেতে উপভোগ করা যায় চারপাশের বিস্তীর্ণ হ্রদের সৌন্দর্য্য। আর পুরো রেস্টুরেন্টটি বুকিং দিলেই বেড়িয়ে আসতে পারবেন হ্রদের যেকোনো জায়গায়। দিনের সৌন্দর্য্যের পাশাপাশি রাতের ‘দোল’ আলাদা আবহ তৈরি করে। হ্রদের বুকে আলোকিত ভাসমান এ তরীটি আলোকিত করে তোলে চারপাশ। দেখে মনে হয় গভীর সমুদ্রে কোনো প্রমোদতরী ভেসে বেড়াচ্ছে।

Rangamati

আরও পড়ুন: ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসুন মনোমুগ্ধকর রাঙ্গামাটি-কাপ্তাই সড়ক

উদ্বোধনের দিন থেকেই রাঙামাটিসহ আশেপাশের জেলাগুলোতে বেশ সাড়া ফেলেছে এই ভাসমান রেস্টুরেন্ট। রাঙ্গামাটির আশেপাশের জেলাগুলো থেকে অনেকেই আসছেন এখানে, পাশাপাশি পর্যটকদের কাছেও জনপ্রিয়তা পেয়েছে এটি। বিকেল থেকে রাত অব্দি বেশ ভিড় লক্ষ্য করা যায় রেস্টুরেন্টে।

দোল-এ বেড়াতে আসা ফারুক খন্দকার বলেন, হ্রদের বুকে এ প্রথম একটি ভাসমান রেস্টুরেন্ট দেখে খুবই ভালো লাগছে। খাবারের মানও যথেষ্ট ভালো।

তানিয়া আক্তার বলেন, আমি চট্টগ্রাম থেকে এসেছি। এখানে দুপুরে খেতে এলাম। বেশ ভালো পরিবেশ, হ্রদের বুকে ভেসে দুপুরের খাবার খাওয়া বেশ আনন্দের। ভালোই লাগছে রেস্টুরেন্টটি।

Rangamati

দোল রেস্তোরার পরিচালক মো. গালিব হাসান বলেন, আমাদের রাঙ্গামাটির এই সুবিশাল কাপ্তাই হ্রদ আমাদের জন্য একটি সম্পদ। এই সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করা উচিত বলে মনে করি। রাঙ্গামাটিতে অনেক ধরনের হাউস বোট রয়েছে কিন্তু কোন ফ্লোটিং রেস্টুরেন্ট নেই। সেই চিন্তা থেকেই আমাদের এই রেস্টুরেন্টের যাত্রা শুরু।

আরও পড়ুন: আশানুরূপ পর্যটকের দেখা মেলেনি রাঙ্গামাটিতে

তিনি আরও বলেন, রেস্টুরেন্টে কমন খাবারের পাশাপাশি রাঙ্গামাটির ট্র্যাডিশনাল ফুডগুলোরও ব্যবস্থা রয়েছে। যা সারাদেশের কাছে রাঙ্গামাটিকে রিপ্রেজেন্ট করবে।

Rangamati

‘দোল’র ম্যানেজিং পার্টনার মুন্না তালুকদার বলেন, এই ফ্লোটিং রেস্টুরেন্টের বিশেষত্ব হলো এটি দেশের একমাত্র উডেন ফ্লোটিং রেস্টুরেন্ট। যেখানে আপনি রাঙ্গামাটির প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগের পাশাপাশি ভাসমান অবস্থায় খাওয়ার সুযোগ পাবেন। রাঙ্গামাটিতে যারা বেড়াতে আসেন তারা চার দেয়ালের আবদ্ধ রেস্টুরেন্টগুলোতে খেতে যান, কিন্তু প্রকৃতির মাঝে বসে খাবারের আনন্দ উপভোগ করার ব্যবস্থা করেছি আমরা।

সাইফুল উদ্দীন/জেএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।