দ্রোহের আগুনে জ্বলছে খুলনার তৃণমূলের রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক খুলনা
প্রকাশিত: ০৫:৫৭ এএম, ১৬ মার্চ ২০১৬

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দ্রোহের আগুনে জ্বলছে খুলনা জেলার গ্রাম্য জনপদ। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে হামলা-পাল্টা হামলা, লুটপাট, ভাংচুর, হুমকি-ধামকি ও বিরোধী পক্ষকে প্রচারণায় বাধা এ সবই নিত্য দিনের ঘটনায় পরিণত হচ্ছে। পুলিশ ও মাঠ প্রশাসনও নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা আমলে নিচ্ছে না। ফলে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে নির্বাচনী এলাকার পরিবেশ।

শুরুতে উৎসবের আমেজ থাকলেও এখন তা জ্বলন্ত উনুনে পরিণত হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপের অভাবে এ ধরনের সহিংস ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিকল্পনা চলছে কেন্দ্র দখলেরও।

সরেজমিনে পরিদর্শন ও একাধিক সূত্রে জানা যায়, ২২ মার্চ জেলার ৬৭টি ইউনিয়নে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে বড় দুটি রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। এ ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দল রয়েছে এগিয়ে।
 
সূত্রানুযায়ী, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীতা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে জেলা আ.লীগের শীর্ষ দুই নেতার পুরনো দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। তৃণমূল দখল থাকায় অধিকাংশ ইউনিয়নে জেলার এক শীর্ষ নেতার অনুসারীরা নৌকা প্রতীক পায়। ফলে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়ে যান অপর শীর্ষ নেতার অনুসারীরা। অপরদিকে প্রার্থী নির্ধারণে তৃণমূলের মতামতকে গুরুত্ব না দেয়ায় যোগ্যরা মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন, এমন অভিযোগে বিএনপিতেও দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে মনোনয়ন বঞ্চিতরা প্রার্থী হয়েছেন। এরই প্রেক্ষিতে অশান্ত হয়ে উঠেছে খুলনা জেলার জনপদ।

প্রথমবারের মতো দলীয়ভাবে আয়োজিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিদিনই ঘটছে সংঘাত-সহিংসতা। প্রথম ধাপের ইউপি ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, সংঘাত-সহিংসতা ততই বেড়েই চলেছে। এ নিয়ে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত এক সপ্তাহে নির্বাচনী এলাকায় পনেরটির বেশি সশস্ত্র হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

কোনো কোনো এলাকায় বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের হামলায় মূল প্রার্থী রয়েছেন কোনঠাসা অবস্থায়। জেলার তেরখাদার দু’টি ইউনিয়নে এমনটিই দেখা গেছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, খুলনার ৪৭টি ইউনিয়নে আ.লীগের ৩৩ জন বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। এদিকে বিএনপিতে রয়েছেন আরো ১১ বিদ্রোহী প্রার্থী। এতোদিন যারা (দলীয় নেতা-কর্মী) একত্রে মিছিল-সমাবেশ করেছেন এখন বিদ্রোহী হওয়ার কারণে সৃষ্টি হয়েছে শত্রুতা।

এ বিষয়ে দিঘলিয়া উপজেলার ২নং বারাকপুর ইউনিয়নের আ.লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী গাজী হাফিজুর রহমান জানান, আ.লীগের মূল প্রার্থী ও সমর্থকদের অবৈধ অস্ত্রের মুখে এখানে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচনে শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ হস্তক্ষেপ করবেন জানানো হলেও মূলত কারো কারো ইন্ধনে দলের মূল প্রার্থীরা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছেন।

তিনি বলেন, বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিলে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন সম্ভব নয়।

আলমগীর হান্নান/এফএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।