কোস্ট গার্ডের বিরুদ্ধে জেলেদের আটকে টাকা দাবিসহ মারধরের অভিযোগ

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
প্রকাশিত: ০৮:৪২ পিএম, ১৯ জুলাই ২০২৩

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ৬৫ দিনের অবরোধ উপেক্ষা করে অবৈধভাবে মাছ শিকারের দায়ে জেলেদের আটক করে টাকা দাবিসহ মারধরের অভিযোগ উঠেছে নিজামপুর কোস্ট গার্ডের বিরুদ্ধে। এতে সাত জেলেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে কোস্ট গার্ড।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) গভীর রাতে রামনাবাদ চ্যানেল থেকে ৪টি বোট ও ৪৬ জন জেলেকে আটকের পরে নিজামপুর স্টেশনে নিয়ে এসে তাদের মারধরের অভিযোগ করেন জেলেরা।

জেলেদের অভিযোগ, সমুদ্রে নয়, আন্ধারমানিক মোহনায় মাছ ধরছিলেন তারা। এক পর্যায়ে কোস্ট গার্ডের সদস্যরা এসে তাদেরকে আটক করে। স্টেশনে নিয়ে মারধর করে এবং অর্থ দাবি করে। পরে সেখানে মৎস্য ব্যবসায়ীরা গেলে তাদেরকে ঢুকতে না দিয়ে উল্টো বের করে দেয়। পরে মৎস্য কর্মকর্তা এসে জরিমানা করে তাদেরকে ছেড়ে দিলে ২০ জন জেলে কুয়াকাটা হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা খারাপ হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে পাঠানো হয়।

গুরুতরা আহতরা হলেন, রাঙ্গাবালি উপজেলার মৌডুবীর দেলোয়ার মৃধা (৩৫), বড় বাশদিয়ার শাহজালাল (৪০), স্বপন (৪৫), জাহাঙ্গীর (৪৭) কোড়ালিয়ার মিন্টু (৪২) ও চম্পাপুরের আবুল বাসার (২৭)।

কোস্ট গার্ডের বিরুদ্ধে জেলেদের আটকে টাকা দাবিসহ মারধরের অভিযোগ

চিকিৎসাধীন জেলে স্বপন বলেন, আমরা মোহনা এলাকায় মাছ ধরছিলাম। হঠাৎ কোস্ট গার্ড এসে আমাদেরকে তাদের স্টেশনে নিয়ে গিয়ে বিভিন্নভাবে লাঞ্ছিত করে এবং মারধর করে। আমাদেরকে একলাখ টাকা দিতে হবে এই কথা বলে আরও মারে।

আরেক জেলে আবুল বাসার বলেন, আমদের এত মারধর করছে যে কান্নাকাটি করেও রেহাই পাইনি। কখনো মারে আবার কখনো মাথা নিচে দিয়ে গড়াগড়ি খেতে বলে, না করলে আবার মারে।

আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়ৎদার মো. জলিলুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, এক জেলের ফোনে জানতে পারি যে তাদের কয়েকজনকে কোস্ট গার্ড আটক করেছে। পরে আমি তাদের স্টেশনে গেলে আমাকে গালাগালি করে বের করে দেয়। আমি বাইরে দাঁড়িয়ে তাদের মারধর এবং চিৎকারের শব্দ শুনতে পাই। আজ তাদেরকে বরিশালে চিকিৎসা করাচ্ছি। চিকিৎসা শেষে তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আইনের আশ্রয় নেবে।

কোস্ট গার্ডের বিরুদ্ধে জেলেদের আটকে টাকা দাবিসহ মারধরের অভিযোগ

এ বিষয়ে নিজামপুর কোস্ট গার্ড স্টেশনের কন্টিজেন্ট কমান্ডার মতিউর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, সমুদ্রে ৬৫ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময় কুয়াকাটা সংলগ্ন চরবিজয় এলাকায় কিছু জেলে মাছ শিকার করছিল। এমন অবস্থায় কোস্ট গার্ডের টহলরত একটি টিম ১৮টি ট্রলার থেকে ৪৬ জন জেলে ও মাঝি এবং চারটি ট্রলার আটক করে নিয়ে আসে। পরে আমরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার মাধ্যমে জরিমানা করে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দিই। মারধরের বিষয়টি আমরা কিছু জানি না।

এ বিষয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জাগো নিউজকে বলেন, খবর পেয়ে আমরা নিজামপুর স্টেশনে গিয়ে তাদেরকে ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেই। ওই সময় কিছু জেলে মৌখিকভাবে আমাকে মারধরের বিষয়টি জানান। তবে ভুক্তভোগী জেলেরা পার্শ্ববর্তী রাঙ্গাবালী উপজেলার বাসিন্দা হওয়ায় আপাতত আমরা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারিনি। তবে তারা যদি কোনো লিখিত অভিযোগ দেন তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আসাদুজ্জামান মিরাজ/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।