মোবাইল চুরির অপবাদ
একই পরিবারের তিনজনকে নির্যাতন সাবেক ছাত্রলীগ নেতার
ঝালকাঠিতে মোবাইল ফোন চুরির অপবাদে একই পরিবারের তিনজনকে অবরুদ্ধ করে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। শহর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রাসেল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তাদের ওপর দফায় দফায় এ নির্যাতন চলে।
নির্যাতনের শিকাররা হলেন শহরের নতুন কলাবাগান এলাকার বলাই কর্মকার (৫৫), তার স্ত্রী রাধা রানী কর্মকার (৪৫) ও তাদের তৃতীয় শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে (১২)।
খবর পেয়ে বুধবার (১৯ জুলাই) দুপুরে ঝালকাঠি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবেকুন নাহার তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত সৈয়দ রাসেল ও তার স্ত্রী পলাতক আছেন।
নির্যাতনের শিকার ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শহরের নতুন কলাবাগান সড়কে বাসা ভাড়া করে বসবাস করেন বলাই কর্মকার। তিনি অসুস্থতার কোনো কাজ করতে পারেন না। তার স্ত্রী বিভিন্ন বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাসেলের বাসার পাশেই ভাড়া থাকায় মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে গত শুক্রবার দুপুর থেকে ওই পরিবারের সবাইকে অবরুদ্ধ করে রাখেন তিনি। এরপর সন্ধ্যায় প্রথমে বলাইয়ের মেয়েকে মারধর করেন রাসেল ও তার স্ত্রী। পরে বলাইসহ তার স্ত্রীকেও মারধর করেন তারা।
গত শুক্রবার থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত তাদের ঘর থেকে বের হতে না দিয়ে কয়েক দফায় নির্যাতন চালানো হয়। এই কয়দিন অনাহারে-অর্ধাহারে থাকলেও নির্যাতনের ঘটনা কাউকে না বলার জন্য হুমকি দেন অভিযুক্তরা। নির্যাতনে বলাই কর্মকারের ডান পা ফুলে গেছে। তার স্ত্রী ও মেয়ের শরীরেও জখম রয়েছে।
স্থানীয় একজন বিষয়টি টের পেয়ে মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে জানালে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) অবহিত করেন। পরে ইউএনও সাবেকুন নাহার পুলিশের একটি দল নিয়ে অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করেন। এদিকে, অভিযানের খবর পেয়ে নির্যাতনকারী রাসেল ও তার স্ত্রী তাদের বাসায় তালা দিয়ে পালিয়ে যান।
ঝালকাঠি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির সাগর বলেন, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্যাতনের বিষয়টি জানতে পেরেছি।
ঝালকাঠি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবেকুন নাহার বলেন, ওই পরিবারের তিনজনকে নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা খবর পেয়ে তাদের উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। অভিযুক্ত রাসেল ও তার স্ত্রী পলাতক।
মো. আতিকুর রহমান/এমআরআর/এএসএম