ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখা মেয়ের মরদেহ উদ্ধার, মা আটক
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় শ্বাসরোধে হত্যার ২৩ দিন পর মায়ের ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখা মর্জিনা খাতুন (৩৪) নামে এক নারীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২২ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে ধুনট থানা পুলিশ উপজেলার চান্দারপাড়া গ্রাম থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে।
নিহত মর্জিনা চান্দারপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের মেয়ে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ নিহত মর্জিনার মা রওশনারা বেগমকে (৫৫) আটক করেছে।
থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মা রওশনারা, ছেলে রাব্বি ইসলাম ও ছেলে বউ নুপুরকে নিয়ে মর্জিনার অভাব-অনটনের সংসার। মাথা গোজার সামান্য বসতভিটা ছাড়া তাদের সহায়-সম্বল বলতে আর কিছু নেই। তাই জীবিকার তাগিদে পরিবারের সবাই নানা অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়েন। সম্প্রতি মর্জিনা অসুস্থতার কারণে শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়েন। তার পক্ষে আর অনৈতিক কাজ করা সম্ভব হয় না। এতে পরিবারের উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যায়।
এ নিয়ে প্রায় চার মাস ধরে তাদের সংসারে অশান্তি চলছিল। পরিবারের পক্ষ থেকে মর্জিনাকে ফের অনৈতিক কাজের জন্য চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু রাজি না হলে মাস তিনেক আগে মর্জিনাকে তারা মারধর করেন। তখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরেন মর্জিনা। এরপরও পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার চাপ সৃষ্টি করলেও তাতে রাজি হননি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ৩০ জুন মর্জিনাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন তার মা, ছেলে ও ছেলের বউ। এরপর মর্জিনার মরদেহ রওশনারার ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখা হয়।
এ হত্যাকাণ্ডের পরদিন ঘরে তালা দিয়ে রওশনারা, রাব্বি ও নুপুর বাড়ি ছেড়ে নিরুদ্দেশ হন। হঠাৎ করে তারা নিরুদ্দেশ হওয়ায় গ্রামবাসীর মাঝে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। তারা থানা পুলিশকে বিষয়টি জানায়। প্রাথমিক তদন্তে সন্দেহ হলে শনিবার সকালে নিহত মর্জিনার মাকে ঢাকা থেকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে রওশনারার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মর্জিনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে নিহতের ছেলে রাব্বি ইসলাম ও ছেলে বউ নুপুর খাতুন এখনো পলাতক আছেন।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, গ্রামবাসীর দেওয়া তথ্যমতে প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতার প্রমাণ মিলেছে। নিহত মর্জিনার মা রওশনারাকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। তাকে সঙ্গে নিয়ে মর্জিনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া মর্জিনার ছেলে এবং ছেলে বউকে আটকের চেষ্টা চলছে। সেইসঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এমআরআর/এমএস