‘আমার চোর দরকার, মালের দরকার নাই’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরশহরে বিপণীবিতানের দুটি দোকান থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের মোবাইল চুরির চারদিনেও কোনো ক্লু পায়নি পুলিশ। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন দোকানি মোবারক হোসাইন জিসান।
রোববার (৩০ জুলাই) দুপুরে তিনি তার নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
গেলো ২৭ জুলাই ভোরে কালিবাড়ি মোড়ে এলআর প্লাজায় ‘মোবাইল মেলা’ নামের দুটি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে।
লাইভে জিসান বলেন, আল্লাহতালা যা করেন নিশ্চয়ই ভালোর জন্য। সবকিছু বোঝা সহজ কিন্তু মেনে নেওয়া কঠিন। আমার প্রশাসনিক বন্ধুবান্ধব বেশি। আমার জোর আবদার থাকবে আপনারা তৎপর হয়ে কাজ করবেন। আমার চোর দরকার, যেটা ক্ষতি হয়েছে তার দরকার নাই। আমি যেহেতু পরিশ্রম করতে জানি, তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করবো। আমার পরিবারের সাপোর্ট আছে। যেদিন থেকে বুঝতে শিখেছি, আমি জানা মতে কারো কোনো ক্ষতির কারণ হয়নি। আমি ক্ষুদ্র মানুষ, আমি আমার জায়গা থেকে যতটুকু পারি উপকার করার চেষ্টা করি। আমার ক্ষতিটা যে করেছে আমি চাই এটা জনসম্মুখে আসুক, মানুষ তাকে চিনুক-জানুক এই কালপ্রিটগুলো কারা।
আরও পড়ুন: দুই দোকান থেকে দেড় কোটি টাকার মোবাইল ফোন চুরি

তিনি আরও বলেন, তারা যে মোবাইলগুলো নিয়ে গেছে, এগুলো নাকের কাছে নিলে শুকলে আমার ঘামের গন্ধ পাবে। কীভাবে এ প্রতিষ্ঠান হয়েছে সেটা আমি জানি। তিল তিল করে পরিশ্রমে এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি। সবাই দোয়া করবেন অন্তত যেন চোরটাকে শনাক্ত করতে পারি। আমার চোর দরকার, মালের দরকার নাই। চোরটা আমার দ্বারপ্রান্তের কেউ, নাহলে সেদিন কেউ জানতো না আমি ঢাকায়।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। এ ঘটনায় মামলার পর থেকে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করে যাচ্ছে। ঘটনার পর আমরা সিসিটিভি ফুটেজসহ বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা আশাবাদী চুরির ঘটনায় রহস্য উদঘাটন হবে।
গেলো বৃহস্পতিবার ভোরে কোনো এক সময় এলআর প্লাজার মোবাইল মেলা দোকানের ভেতরে ঢুকে চোর। তারা দামি ব্র্যান্ডের ২০০ শতাধিক মোবাইল চুরি করে নিয়ে যায়। এরমধ্যে আইফোন-১৪ প্রো ম্যাক্স, আইফোন-১৩ প্রো ম্যাক্স, আইফোন-১৩, আইফোন-১২ প্রো ম্যাক্স, আইফোন-১১ প্রো ম্যাক্স, গুগল পিক্সেল ৭ প্রো, অপোর বিভিন্ন মডেলের, ভিভোর বিভিন্ন মডেলের, শাওমি বিভিন্ন মডেলের, ওয়ান প্লাস ব্র্যান্ডের বিভিন্ন মডেলের, স্যামসাংয়ের, স্যামসাং ফোল্ড-৩ মডেলের, ফোল্ড-৪ মডেলের, ফ্লিপ-৩ মডেলের ও ফ্লিপ-৪ মডেলের মোবাইল আছে। তবে তুলনামূলক কম দামের মোবাইলগুলো রেখে গেছে চোরের দল।
আবুল হাসনাত মো. রাফি/এসজে/জিকেএস