ছেলের মৃত্যুশোক ছাপিয়ে ঋণশোধের দুশ্চিন্তা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশিত: ০৬:৩২ পিএম, ০৭ আগস্ট ২০২৩

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় জুনায়েদ মিয়া (২২) নামের এক বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যুর খবরে তার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। রোববার (৬ আগস্ট) সৌদি আরবের স্থানীয় সময় দুপুর ১টার দিকে দাম্মাম শহরে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত জুনায়েদ মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের রুটি গ্রামের প্রবাসী হামিদুল ইসলামের ছেলে। তিনি দাম্মাম শহরে একটি কোম্পানিতে রোড ক্লিনার (পরিচ্ছন্ন কর্মী) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

নিহত জুনায়েদের মামা শামীম সরকার বলেন, আমার ভগ্নিপতির দুই ছেলে ও এক মেয়ে। এদের মধ্যে জুনায়েদ ছিল দ্বিতীয়। প্রায় এক বছর আগে ঋণ করে পরিবারে সাচ্ছন্দ্য ফেরানোর আশায় প্রবাসে পাড়ি দেয় জুনায়েদ। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, রোববার কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় জুনায়েদের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।
তিনি জানান, রাতে অন্য এক বাংলাদেশির মাধ্যমে আমরা জুনায়েদের মৃত্যুর খবরটি পেয়েছি। ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে গিয়ে এমন মৃত্যু বেদনাদায়ক।

তিন মাস আগে তার বাবা হামিদুল ইসলামও ঋণ করে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরব পাড়ি জমান। শোকাবহ পরিবারকে সান্ত্বনা দেওয়ারও ভাষা নেই। সরকার যদি পাশে না থাকে তাহলে পরিবারের ঋণের বোঝা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন হবে বলে জানান তিনি।

সোমবার (৭ আগস্ট) দুপুরে জুনায়েদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শোকাবহ অবস্থা। এই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় নিহতের মা, ভাইবোন ও স্বজনদের আহাজারিতে পুরো এলাকায় শোকের মাতম বইছে। কোনো সান্ত্বনাই তাদের কান্না থামাতে পারছে না।

নিহত জুনায়েদের মা তাছলিমা আক্তার ছেলের ছবি দেখে বুক চাপড়ে আহাজারি করছেন। তিনি আহাজারি করে বলতে থাকেন, ‘আমি আমার ছেলের মরদেহটা অন্তত দেখতে চাই। মরদেহ আনতে নাকি বহু টাকা লাগবে। এতো টাকা আমি এহন কই পাবো? এহনো ৮ লাখ টাকা দেনা শোধ করতে পারিনাই। পাওনাদারদের টাকাই বা দিবো ক্যামনে?’

জুনায়েদের মরদেহ পেতে সরকার ও দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সহযোগিতা কামনা করেন শোকাহত পরিবার ও স্বজনরা।

আবুল হাসনাত মো. রাফি/এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।