ঘরে বাবার মরদেহ রেখে পরীক্ষা দিলেন মেয়ে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ০১:৪৪ এএম, ১৮ আগস্ট ২০২৩

কুড়িগ্রামে বাবার মরদেহ ঘরে রেখে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন মোছা. জিম আক্তার নামে এক পরীক্ষার্থী। তিনি কুড়িগ্রাম পৌর শহরের করিমের খামার এলাকার সদ্যপ্রয়াত মো. জুয়েল মিয়ার মেয়ে।

চার ভাই-বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। বাবা পেশায় ছিলেন রাজমিস্ত্রী। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা যান।

বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সকালে নিজ বাড়িতে বাবার মরদেহ রেখে নীলারাম স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন জিম।

জানা গেছে, কুড়িগ্রাম পৌরসভার করিমের খামার গ্রামের জুয়েল মিয়া পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি। বুধবার তিনি রংপুরে কাজ করে রাত ১২টায় বাসায় ফেরেন। এরপর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে যান। জিম ফজরের নামাজ পড়তে উঠে দেখেন বাবার রুম থেকে গোঙানির আওয়াজ আসছে। পরে তার ডাকাডাকিতে পরিবারের বাকি লোকজন উঠে দেখেন ততক্ষণে জুয়েল মিয়া হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন।

করিমের খামার গ্রামের আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, জুয়েল মিয়া আমার প্রতিবেশী। বুধবার রাতে তিনি রংপুর থেকে কাজ করে বাসায় ফেরেন। ভোরে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়। তার মেয়ে জিম পড়াশোনায় খুব মনোযোগী ছাত্রী। পরীক্ষা শুরুর দিন বাবার মৃত্যুতে সে মুষড়ে পড়লেও প্রতিবেশী সহপাঠী ও স্বজনরা তাকে সান্ত্বনা দিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যায়।

ওই ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর মোছা. সহিরন বেগম বলেন, আমার এলাকার জুয়েল মিয়া একজন হতদরিদ্র মানুষ। বাবার আকস্মিক মৃত্যুতে তার মেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেও শেষ পর্যন্ত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষার হলে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়া অবশ্যই অনেক কঠিন কাজ। আজ মাগরিবের পরে জুয়েল মিয়ার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

ফজলুল করিম ফারাজী/এমআরআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।