ডেঙ্গু কেড়ে নিলো পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির প্রাণ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বরিশাল
প্রকাশিত: ০২:২৬ এএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন সুজন। মাত্র ২৯ বছর বয়সে ডেঙ্গুর কাছে হার মানতে হলো তাকে। পাঁচদিন অসুস্থ থেকে শনিবার শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সুজন।

একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্যর মৃত্যুতে সুজনের পরিবারের নেমে এসেছে অন্ধকার। দুই শিশুকন্যা নিয়ে এখন পথে বসার উপক্রম তার স্ত্রীর।

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের কাংশি গ্ৰামের মৃত দুলালের ছেলে সুজন। হঠাৎ করেই পরিবারের কান্ডারিকে হারিয়ে ভবিষ্যতের চিন্তায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা।

আরও পড়ুন: ডেঙ্গু আক্রান্ত ভাইয়ের টেস্ট রিপোর্ট পেতে ছোট্ট হুমাইরার ‘যুদ্ধ’

সুজনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ৫ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করেই জ্বরে আক্রান্ত হন সুজন। স্থানীয় ধামুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরীক্ষায় ধরা পরে ডেঙ্গু। সেখানে চিকিৎসাধীন থেকে তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ৯ সেপ্টেম্বর বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ সেপ্টেম্বরই তার মৃত্যু হয়। এরপর রোববার নিজ গ্ৰামে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

সুজনের বড় ভাইয়ের স্ত্রী সুমী জাগো নিউজকে জানান, সুজন ভ্যান গাড়ি চালিয়ে সংসার চালাতেন। মাঝেমধ্যে মাছ ধরেও জীবিকা নির্বাহ করতেন। তার দুই মেয়ে রয়েছে। বড় মেয়ের বয়স ৫ বছর ও ছোট মেয়ের বয়স ১৮ মাস।

সুমী বলেন, ‘সুজন ভ্যান চালিয়ে যা পেতেন সেটা দিয়ে দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে টেনেটুনে কোনো মতে চলতো তাদের সংসার। ডেঙ্গুতে মারা যাওয়ায় পরিবারে আয় করার মতো আর কেউ রইলো না। তার স্ত্রী-সন্তানদের এখন কীভাবে চলবে, তার উত্তর আমরা কেউই খুঁজে পাচ্ছি না।’

আরও পড়ুন: রাতেও হাসপাতালে ডেঙ্গুরোগীর ভিড়

তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ওয়ার্ড মেম্বার সুজনের স্ত্রী ও দুই মেয়ের খোঁজ নিয়ে গেছেন। তারা সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তারা যদি সুজনের স্ত্রীর জন্য স্থায়ী একটা কাজের ব্যবস্থা করে দিতেন তাহলে দুই মেয়ে নিয়ে কিছু একটা করে খেতে পারতেন।’

শোলক ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড সদস্য সিরাজ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা সুজনের পরিবারের খোঁজ-খবর নিয়েছি। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। এছাড়া তার স্ত্রীকে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সরকারি সহায়তার চালের কার্ড, বিধবা ভাতা ও একটি সেলাই মেশিনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।’

স্থানীয় শোলক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরদার আব্দুল হালিম জাগো নিউজকে বলেন, ‘সুজনের পরিবারের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে যতটুকু সম্ভব সাহায্য করা হবে।’

শাওন খান/কেএসআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।