‘পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছি, কিন্তু আমার লাশটুকু গ্রহণ করো’

ফেনীতে ব্যাগে চিরকুট লিখে রেখে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়েছেন এক গৃহবধূ। বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ফেনী রেলওয়ে স্টেশনের অদূরে খাজুরিয়া এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইন থেকে ফরিদা ইয়াসমিন (৩৩) নামে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
দুই শিশু সন্তানের মা নিহত ফরিদার স্বামীর বাড়ি পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের উত্তর চন্দনা এলাকায়।
রেলওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ দিয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল ‘সুবর্ণা এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি। ফেনী রেলস্টেশনের অদূরে খাজুরিয়া এলাকায় ওই নারী হঠাৎ চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন। ট্রেনে কাটা পড়ে তার শরীর ও পায়ের অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা ফেনী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টারকে জানালে তিনি বিষয়টি রেলওয়ে পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ব্যাগে একটি চিরকুট পাওয়া যায়।
চিরকুটে লেখা ছিল, ‘পৃথিবীতে সন্তানের চেয়ে আপন কেউ হয় না। এক সন্তান আপন না হলেও আরেক সন্তান আপন হয়। তাই খুব কষ্ট হয় আমার মেয়েকে ছাড়া বাঁচতে। আমার মেয়ে যখন মা বলে জড়াই ধরে আমার মনে হয় সারা পৃথিবীর সুখ আমার কাছে। মা-বাবা তোমরা যদি পারো আমাকে ক্ষমা করো। আমি তোমাদের কারো বোঝা হতে চাই না। তাই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছি, কিন্তু আমার লাশটুকু গ্রহণ করো। কেউ যদি আমার ০১৩০৩-১৮*** নম্বরে ফোন করে আমার লাশটা পাঠায়।’
চন্দনা এলাকার আবদুর রহিম জানান, নিহত গৃহবধূ ফরিদার বাবার বাড়ি কাজিরহাট রানীরহাট অশ্বদীয়া এলাকায়। তার স্বামী নান্টু ঢাকায় চাকরি করেন। বৃহস্পতিবার সকালে ঝগড়ার রেশ ধরে শ্বশুর আবদুল কাদের ঝন্টু তাকে মারধর করেছেন বলে শুনেছি।
ফেনী রেলওয়ে স্টেশন পুলিশের (এসআই) সাইফুল ইসলাম জানান, নিহত ওই নারী শাড়ি পরিহিত ছিলেন। তার সঙ্গে থাকা ব্যাগে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় লাকসাম জিআরপি থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হবে।
আবদুল্লাহ আল-মামুন/এফএ/জেআইএম