বিপ্লব হত্যা: ৩ আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ড, তিনজনের যাবজ্জীবন
যশোরের অভয়নগরের চরমপন্থি সদস্য এনামুল হক বিপ্লব হত্যা মামলায় তিন আসামিকে আমৃত্যু ও অপর তিনজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় একজনকে খালাস দিয়েছেন।
রোববার (২৯ অক্টোবর) অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তাজুল ইসলাম এক রায় ঘোষণা করেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পিপি আসাদুজ্জামান জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আমৃত্যু যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- অভয়নগর বর্ণি গ্রামের মতিয়ার রহমান ফকিরের ছেলে মুরাদ ফকির, মৃত ছলেমান মোল্লার ছেলে ইরাফ আলী মোল্লা ও মৃত হরমুজ বিশ্বাসের ছেলে আনোয়ার হোসেন বিশ্বাস।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে হত্যা মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবন
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- নড়াইল সদরের দিঘীরপাড় গ্রামের খালেক ওরফে মালেক মোল্লার ছেলে আনারুল ইসলাম, হরিশপুর গ্রামের মতলেব মোল্লার ছেলে রুবেল হোসেন মোল্লা ও কালীনগর বিছালী গ্রামের মৃত কওছার ফারাজীর ছেলে আলাই ফারাজী ওরফে আলামিন ফারাজী।
এছাড়া এ মামলায় খালাস পেয়েছেন অভয়নগরের শংকরপাশা গ্রামের আবুল হোসেন গাজীর ছেলে উজ্জল হোসেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১১ নভেম্বর অভয়নগরের বর্ণী গ্রামের চরমপন্থি দলের সদস্য বিপ্লব তার ছোট মামা শাহাদাৎ মোল্লার সঙ্গে বের হন প্রতিবেশীর বাড়িতে থাকার উদ্দেশ্যে। পরে বিপ্লব প্রতিবেশী ইরাফদের বাড়িতে ঘুমাবে বলে মামাকে শাহদতের বাড়ি পাঠিয়ে দেন। পরদিন সকালে পাথালিয়া ক্যাম্পের পুলিশ গ্রামের একটি ধানক্ষেত থেকে বিপ্লবের মরদেহ উদ্ধার করে।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, নিহত বিপ্লব ছিল চরমপন্থি দলের সক্রিয় সদস্য। এছাড়া মোটরসাইকেল চোরাই সিন্ডিকেটের হোতা ও চিহ্নিত চাঁদাবাজ। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা ছিল। এলাকার আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশক্রতার জেরে আসামিরা তাকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে প্রথমে মারপিট এবং পরে শ্বাসরোধে হত্যা পর মরদেহ ধানক্ষেতে ফেলে দিয়েছিল।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় নানা হত্যায় নাতনির যাবজ্জীবন
এ ঘটনায় নিহতের মামা শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে সাতজনকে আসামি করে অভয়নগর থানায় মামলা করেন। এ মামলার পুনঃতদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১০ জানুয়ারি অভয়নগর থানার এসআই শফিকুল ইসলাম সাতজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি মুরাদ ফকির, ইরাফ আলী মোল্লা ও আনোয়ার হোসেন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রত্যেককে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অন্য আসামি আনারুল ইসলাম, রুবেল হোসেন, আলাই ফারাজী ওরফে আলামিন ফারাজীর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। সাজাপ্রাপ্ত আনারুল ইসলাম বাদে সব আসামি কারাগারে আছেন।
মিলন রহমান/জেএস/এএসএম