ঝিনাইদহে কয়েক মিনিটের ঝড়ে ধান-কলাগাছের ব্যাপক ক্ষতি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: ০৬:৩৯ পিএম, ০৫ নভেম্বর ২০২৩

ঝিনাইদহে কয়েক মিনিটের ঝড়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাঁচ হেক্টর জমির ধান মাটিতে হেলে পড়েছে এবং ১০ হেক্টর জমির কলা গাছ ভেঙে পড়েছে। রোববার (৫ নভেম্বর) সকালে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ ঝড়ো বাতাস বয়। এর সঙ্গে বৃষ্টিও শুরু হয়। কয়েক মিনিটের এ ঝড়ে সদর উপজেলার সাগান্না, কুমড়াবাড়িয়া, হলিধানী ইউনিয়নের নগরবাথান, লেবুতলা, হলিধানীসহ বিভিন্ন গ্রামের ফসলের ক্ষতি হয়েছে। কৃষকের অধিকাংশই কলাই বিক্রির উপযোগী হয়নি। ফলে কৃষকের ক্ষতির মাত্রা আছে বেশি। মাঠের ধানগুলোও ঘরে তোলার অপেক্ষায় ছিলেন কৃষক। কিন্তু এ ঝড়ে ধানগাছও মাটিতে পড়ে গেছে। আধা পাকা ধানের তুলনায় অপরিপক্ব ধানগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলছে কৃষক।

সদর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ২৫ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ঝড়ে ৫ হেক্টর ধানগাছ এবং ১ হাজার ১৭৫ হেক্টর কলা গাছের মধ্যে ১০ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে কৃষকরা বলছেন, আশপাশের এলাকার প্রায় ৪০০ কৃষকের কয়েক হাজার বিঘা জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত সদর উপজেলার মাধবপুর গ্রামের কৃষক কামাল হোসেন বলেন, দুই বিঘা জমিতে কলাগাছ ছিল দেড় হাজার। এর মধ্যে ২০ হাজার টাকার কলা বিক্রি করেছি। বাকি গাছের কলা কয়েকদিন পরই বিক্রি করা যেত। কিন্তু ঝড়ে সব গাছ ভেঙে গেছে। দুই বিঘা জমিতে প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এবার খুবই লোকসান হলো।

ঝিনাইদহে কয়েক মিনিটের ঝড়ে ধান-কলাগাছের ব্যাপক ক্ষতি

নগর বাথান গ্রামের কৃষক আবজাল হোসেন বলেন, আমার জমির অল্প কিছু ধান কেটেছি। আরও কিছু ধান আছে। শনিবারের ঝড়ে জমির সব ধান মাটিতে হেলে পড়েছে। মাঠের অন্যদের জমির ধানও একদম হেলে পড়ে আছে। এতে বিঘায় যদি ৩০ মণ ধান পাওয়া যেত এখন সেখানে ২০ মণ ধান পাওয়া যাবে। এতে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মাঠের অনেক জমির ধান সবেমাত্র ফোলা শুরু হয়েছে সে গুলোও হেলে পড়েছে এসব জমি থেকে অর্ধেক ধানও কৃষক ঘরে তুলতে পারবে না।

রাশিয়া বেগম বলেন, কলার গাছ ভালো ছিল, ফলনও ভালো হতো। কিন্তু ঝড়ে সব শেষ করে দিয়ে গেলো। সারের দোকানেও দেনা ১৫ হাজার টাকা। কীভাবে কী করবো বুঝে উঠতে পারছি না।

একই গ্রামের আফজাল লষ্কর বলেন, চার বিঘা জমিতে আমন ধান ছিল। কিছুদিন পরই ঘরে উঠতো ধান। কিন্তু ঝড়ে গাছ মাটিতে পড়ে গেছে। আধপাকা ধান খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও অপরিপক্ব ধানগুলো বেশি নষ্ট হবে। এতে বিঘায় গড়ে ৮-১০ মণ ফসল কম পাবো।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুর এ নবী বলেন, কলা গাছের বেশি ক্ষতি হলেও ধান আধপাকা থাকায় তেমন কোনো ক্ষতির শঙ্কা নেই। সকাল থেকেই মাঠ পরিদর্শন করছি। সঠিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করে প্রণোদনা বা অন্য সহযোগিতার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। পাশাপাশি কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকেও তাদের সহযোগিতার সার্বিক চেষ্টা থাকবে।

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এসজে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।