পলাশ ও ঘোড়াশাল কারখানায় সার উৎপাদন বন্ধ
গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় আবারো বন্ধ হয়ে গেছে দেশের বৃহৎ দুইটি সার কারখানার উৎপাদন। কৃষি মৌসুমে সেচ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়াতে ১৪২২ ও ৩০৫ মেট্রিক টন ক্ষমতা সম্পন্ন নরসিংদীর ঘোড়াশাল ও পলাশ সার কারখানা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিসিআইসির অধীনস্থ সার কারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়। যার ফলে শুক্রবার রাত থেকে কারখানা দুইটিতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় পেট্রোবাংলা।
কারখানা দুইটি সূত্রে জানা যায়, ঘোড়াশাল সার কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা চৌদ্দশত বাইশ মেট্রিক টন। পলাশ সার কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা তিনশ পাঁচ মেট্রিক টন। বন্ধের পূর্ব মুহূর্তে দৈনিক কারখানা দুইটিতে যথাক্রমে নয়শ পঞ্চাশ ও তিন শত মেট্রিক টন সার উৎপাদন করা হতো।
প্রতি বছরই কৃষি মৌসুমে সেচ সুবিদা বৃদ্ধির জন্য সরকার বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়াতে গ্রীষ্মকালে সার কারখানায় গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়।
কারখানা দুইটির উৎপাদন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর দেশে ইউরিয়া সারের নির্ধারিত চাহিদা ২৮ লাখ টন। বিসিআইসি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪.৫৫ লাখ টন। তার মধ্যে ঘোড়াশাল ইউরিয়ায় ১.৬০ লাখ টন ও পলাশ ইউরিয়ায় ০.৫৫ লাখ টন নির্ধারণ করা হয়েছে। দ্রুত গ্যাস সরবরাহ শুরু না হলে চলতি বছরের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হবে এবং দেশীয় ইউরিয়া সারের ঘাটতি দেখা দিবে।
পলাশ সার কারখানার সিবিএ সভাপতি হুমায়ন কবির বলেন, ঘোড়াশাল ইউরিয়া একটি কেপিআই মান-১ বিশিষ্ট উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন সার কারখানা। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকার কারণে কারখানার মূল্যবান যন্ত্রপাতি, ইকুইপমেন্টসমূহ করোশন, ইরোশনজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া উচ্চপ্রযুিক্ত সম্পন্ন কারখানার বিভিন্ন ভেসেলের মূল্যবান ক্যাটালিস্ট সংরক্ষণ করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। উৎপাদন বন্ধ থাকার কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় কারখানাসমূহ আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
কারখানার গ্যাস প্রত্যাহারের কারণে উৎপাদন বন্ধ হওয়ায় শ্রমিক-কর্মচারীগণ কর্মোদম হারিয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। এভাবে একের পর এক দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় কারখানার ফিক্সড কষ্ট ব্যয় অব্যাহত থাকায় তারল্য সংকট দেখা দেয়। ফলে লাভজনক প্রতিষ্ঠান লোকসানের সম্মুখীন হয়।
এ বিষয়ে ঘোড়াশাল সার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্রকৌশলী) অমর কুমার বিশ্বাস বলেন, গ্যাস প্রত্যাহার করে নেয়ার সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক শুক্রবার থেকে কারখানার উৎপাদন বন্ধ করা হয়। পরবর্তী নির্দেশনা পাওয়ার পর পুনরায় কারখানা দুইটি চালু হবে। তবে কবে নাগাদ কারখানা চালু করা হবে তা জানাতে পারেনি তিনি।
সঞ্জিত সাহা/এআরএ/আরআইপি