নাটোর

নৌকার সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর, লুটপাটের অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নাটোর
প্রকাশিত: ০৬:০২ পিএম, ০৮ জানুয়ারি ২০২৪

নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় নাটোরের বাগাতিপাড়া ও লালপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি ও দোকানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।

সোমবার (৮ জানুয়ারি) সকাল পর্যন্ত এসব বাড়িঘর ও দোকানে হামলা করা হয়। এসব বাড়িঘর ও দোকানপাট সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের অনুসারীদের।

নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের অনুসারী ও স্থানীয় বিএনপির কিছু নেতাকর্মী এ সহিংসতায় অংশ নিয়েছেন বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। ঘটনার পর থেকে পরাজিত নৌকার প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বকুলের অনুসারীরা পলাতক বলে জানা গেছে।

jagonews24

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোববার (৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ নির্বাচিত হওয়ার পর তার কর্মী হিসেবে পরিচিত দয়ারামপুর ইউনিয়নের চানপুর এলাকায় ইউপি মেম্বার আক্কাস আলীর নেতৃত্বে তার ছেলে সবুজ, আওয়ামী লীগ কর্মী জাহিদুল, লিটন, শাহজালাল, কালুসহ ৮-৯ জন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-পাঠচক্র সম্পাদক জাকারিয়া হোসেনের বাড়িতে হামলা চালান। এসময় তার বাড়িতে ছিলেন মা আলেয়া বেগম ও দুই ভাই। এসময় তারা হাঁসুয়ার কোপে বাড়ির টিনের দেওয়াল কেটে ঘরে ঢুকে ঘরের আসবাব ও টেলিভিশন ভাঙচুর করেন।

বাগাতিপাড়া পৌরসভার টুনিপাড়া এলাকায় রুবেলের বাড়িতে প্রথমে স্থানীয় বিএনপি কর্মীরা ও পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালামের সমর্থকরা হামলা চালান। এসময় বাড়িতে থাকা এক লাখ ৬০ হাজার টাকা ও দুটি সোনার চেইন নিয়ে যান বিএনপির কর্মীরা। এছাড়া রাতে ভাঙচুর করা হয় দয়ারামপুর ইউনিয়নের সোনাপুর বাজারের মুদিদোকান ও টি-স্টল, বাগাতিপাড়া পৌর ১ নম্বর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলাল হাজি, আওয়ামী লীগ কর্মী কাচু ও তুষারের বাড়ি।

কর্মীদের ওপর হামলার এমন একাধিক ঘটনা লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঘটছে বলে অভিযোগ করেন সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল।

jagonews24

ভুক্তভোগী জাকারিয়া বলেন, ‘হামলার পরে আমাকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই মেরে ফেলা হবে বলে আমার মাকে শাসিয়েছে মেম্বারের লোকজন।’

হামলার শিকার রুবেল বলেন, “রাত থেকে আমার বাসায় আমাকে কয়েক দফা খুঁজতে এসেছে বিএনপি ও নির্বাচিত এমপির লোকেরা। বাসার নারীদের বলে গেছে, ‘আমি বাসায় এলে পরিণতি খারাপ হবে’।”

বকুলের কর্মী নাসির উদ্দিন বলেন, ‘ফজরের নামাজ শেষে সোনাপুর বাজারে চা পান করতে গেলে আমার বাবার ওপর হামলা চালায় কালামের লোকজন। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’

বাগাতিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম ঠান্ডু বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কর্মীদের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। আমাদের কর্মীরা বাড়িঘরে থাকতে পারছেন না। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।’

নৌকার পরাজিত প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বকুল জানান, ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই তার অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।

jagonews24

অভিযোগের বিষয়ে জানতে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আবুল কালামের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

বাগাতিপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নান্নু খান জানান, আওয়ামী লীগের কিছু কর্মীর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। মৌখিকভাবে অভিযোগের পর পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সকাল থেকেই পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে বিক্ষিপ্ত এসব ঘটনায় এখনো অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রেজাউল করিম রেজা/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।