নড়াইলে এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র নির্বাচনে অনিয়ম


প্রকাশিত: ০৪:৪৫ এএম, ১০ এপ্রিল ২০১৬
ফাইল ছবি

গত ৩ এপ্রিল সারাদেশে শুরু হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা। যশোর বোর্ডের অধীন নড়াইল জেলার ১১টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ পরীক্ষা। নিয়ম আছে যে কোনো কলেজের শিক্ষার্থীরা ওই কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে পারবে না, তাকে যেতে হবে বোর্ড কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত পার্শ্ববর্তী কোনো কেন্দ্রে এবং ওই কেন্দ্রে যে কক্ষে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেবে তাদের শিক্ষক পরিদর্শক থাকতে পারবেন না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় তথা সরকারের উদ্দেশ্য পরীক্ষার্থীরা যাতে অসদুপায় অবলম্বনের জন্য অনুকূল পরিবেশ না পায়।

কিন্তু নড়াইল জেলার ১১টি পরীক্ষাকেন্দ্রের ৫টিতে এ নিয়ম মানা হচ্ছে না। শহীদ আব্দুস সালাম ডিগ্রি কলেজ, কালিয়া কেন্দ্রে ( কেন্দ্র কোড ৩২৩) পরীক্ষা দিচ্ছে ওই কলেজের শিক্ষার্থীরাই।

এ রকম মুন্সী মানিক মিয়া ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্র (কেন্দ্র কোড ৩২৪), লাহুড়িয়া এস এম এ আহাদ মহাবিদ্যালয় কেন্দ্র (কেন্দ্র কোড ৪১১), নবগঙ্গা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্র (কেন্দ্র কোড ৪১২), হাবিবুল আলম বীর প্রতীক মহাবিদ্যালয় কেন্দ্র (কেন্দ্র কোড ৪১৯), কালিয়া, নড়াইলে স্ব স্ব কলেজের শিক্ষার্থীরাই পরীক্ষা দিচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে ’ভ্যেনু’ হিসেবে একই ক্যাম্পাসে অবস্থিত অথবা পার্শ্ববর্তী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ব্যবহৃত হলেও এসব কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ ব্যবস্থাপনার সামগ্রিক দায়িত্বে থাকেন সংশ্লিষ্ট কলেজের অধ্যক্ষসহ অন্যান্য শিক্ষকেরা।

জানা গেছে, বিগত বছরগুলোতে এসব কেন্দ্রে শিক্ষকদের সক্রিয় সহযোগিতা নিয়ে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়েছেন এবং পরীক্ষার ফলেও অন্যান্য কেন্দ্র থেকে এসব কেন্দ্রের ব্যাপক পার্থক্য দেখা যায়। পাসের হার ও জিপিএ ৫ প্রাপ্তির দিক দিয়ে এগিয়ে থাকে তারা। উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষে ভর্তির ক্ষেত্রেও এসব কলেজ থাকে চাহিদার শীর্ষে। এর ফলে পরীক্ষার ফল ও ভর্তির ক্ষেত্রে সৃষ্টি হয় ব্যাপক বৈষম্য।

নড়াইলের জেলা প্রশাসক হেলাল মাহমুদ শরীফ বলেন, পার্শ্ববর্তী কেন্দ্র দূরে হওয়ায় এবং অবকাঠামোগত সুবিধা বিবেচনায় রেখে আমরা কেন্দ্রের নাম ঠিক রেখে নিকটস্থ কোনো মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভ্যেনু হিসেবে ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছি। সেই সঙ্গে স্বীয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ যাতে পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন না করতে পারেন এটি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি।

যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সমীর কুমার কুন্ডু বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ আছে কেন্দ্র পরিবর্তন সম্পর্কিত বিধিবিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করার। সব ক্ষেত্রে আমরা পুরোপুরি নিয়ম অনুসরণ করতে পারিনি। নিয়মের ফাঁক-ফোকর আবিষ্কার করে কলেজগুলো পার্শ্ববর্তী মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে ভ্যেনু দেখিয়ে এগুলো করছে। অনেক সময় জনপ্রতিনিধি ও জেলার ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাগণের অনুরোধ রাখতে হয়। তবে বোর্ড কর্তৃপক্ষ পর্যায়ক্রমে এ বিষয়টি নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসবে। যেমন নড়াইল জেলার মাইজপাড়া কলেজ কেন্দ্রে মাইজপাড়া কলেজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিত। ২০১৫ সাল থেকে এটা আমরা নিয়মের মধ্যে নিয়ে এসেছি।

নড়াইল আব্দুল হাই ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. মনিরুজ্জামান মল্লিক বলেন, উপজেলা সদরের বাইরে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কলেজগুলোতে পরীক্ষাকেন্দ্র থাকলে অনিয়ম হবে এটা স্বাভাবিক।

হাফিজুল নিলু/এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।