নড়াইলে আ.লীগের মনোনয়ন বেচাকেনার অভিযোগ


প্রকাশিত: ০৩:২৮ এএম, ১১ এপ্রিল ২০১৬

তৃতীয় ধাপে নড়াইল সদর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৩ এপ্রিল। এই সাতটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেয়াকে কেন্দ্র করে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হাতাশা দেখা দিয়েছে।

তাদের অভিযোগ, বর্ধিত সভা করে তৃণমূলের ভোটে যাদের নাম দেয়া হয়েছিল জেলা কমিটির নেতারা তাদের মনোনয়ন না দিয়ে দল করে না, এলাকায় গ্রহণযোগ্যতা নেই, দলে নতুন যোগ দিয়েছেন এমন ব্যক্তিকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। এখানে মনোনয়ন বেচাকেনা হয়েছে।

এমন ঘটনার বিষয়ে জানতে চেয়ে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অচীন চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে দলের নেতাকর্মীরা জানান, তিনি ভারতে গেছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দীন খান বলেন, দলীয় মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে হয়তো দুই একটা ঠিক হয়নি, তবে অর্থের বিনিময়ে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে এটা সঠিক নয়। তিনি বলেন, কিছুটা চাপের কারণে দলের অনেক ত্যাগী এবং যোগ্য নেতাকে মনোনয়ন দেয়া সম্ভব হয়নি।

সদর উপজেলার মুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বিপুল বিশ্বাস বলেন, তৃণমূল থেকে আমার এবং সাধারণ সম্পাদক পল্লব কুমার মজুমদারের নাম পাঠানো হলো। কিন্তু দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে ওর্য়াকার্স পার্টির জেলা কমিটির সহ-সভাপতি ও কৃষক সংগ্রাম সমিতির জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ অধিকারীকে। এখানে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী পল্লব কুমার মজুমদার।

শাহাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহামুদ খান বলেন, দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে পুলিশ কর্মকর্তা ইলিয়াছ হোসেনের ছেলে মো. খশরুল আলমকে। স্থানীয় ভোটারসহ নেতা-কর্মীরা তাকে চেনে না। এমন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়ায় নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া খুবই কষ্টসাধ্য। তিনি বলেন, এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন পান্না।

আউড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, বর্ধিত সভা করে আটজনের নাম পাঠানো হয়। সেই নামের তালিকায় পলাশ মোল্যার নাম ছিল না। তিনি বলেন, মো. পলাশ মোল্যা বিএনপির সমর্থক ছিল। তাকে কোনো দিন আওয়ামী লীগ করতে দেখিনি। শুনেছি নির্বাচনের কিছুদিন আগে সে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে। এখানে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হচ্ছেন মো. মাসুদ সিকদার।

আওয়ামী লীগ নেতা মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, গত ৪ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে ভদ্রবিলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের জন্য মাইকে আমার নাম ঘোষণা করা হয়। আমি এলাকায় এসে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করি। কিন্তু দুইদিন পর শুনি ওই ইউনিয়নে আবিদুর রহমান নামের একজন বিত্তশালী ব্যক্তির নাম ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটা কেমন রাজনীতি। তিনি মনে করেন,এমন হলে সাধারণ মানুষের দলের প্রতি আস্থা থাকবে না।

জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোহম্মদ আলী বলেন, দলের ত্যাগী, পরীক্ষিত, দীর্ঘদিন ধরে দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের মনোনয়ন দেয়া হয়নি। এখানে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে বিভিন্ন দল থেকে সদ্য আগত অর্থশালী ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এতে তৃণমূলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা ক্ষুব্ধ ও হতাশ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এমপি স্বাক্ষরিত (২২ ফেব্রুয়ারি-২০১৬) প্রেরিত পত্রের নির্দেশাবলী সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে এবং ওই চিঠি প্রাপ্তির পরে তা গোপন করে নিজেদের মনগড়া পদ্ধতির মাধ্যমে অর্থ বাণিজ্যের লক্ষ্যে নীল-নকশার মাধ্যমে এ ধরনের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

হাফিজুল নিলু/এসএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।