হাওরে নির্ধারিত সময়ে বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় বিএনপির প্রতিবাদ
সুনামগঞ্জের হাওরে বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতি ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলা বিএনপি। শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শহরের পুরাতন বাস-স্টেশন এলাকায় সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন নেতাকর্মীরা।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সভাপতি কলিম উদ্দিন মিলন। এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি মল্লিক মঈন উদ্দিন সোহেল, নাদের আহমদ, আনিসুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুলসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বক্তারা বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে সুনামগঞ্জ জেলায় ৭৩৩টি প্রকল্পে ৫৯১ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করার জন্য সরকার ১২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩ সালে বাঁধের কাজ শুরু এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী বাঁধের ৫ শতাংশ কাজও হয়নি। নির্ধারিত সময়ের ১ থেকে দেড় মাস পর বাঁধের কাজ শুরু হলেও এখন পর্যন্ত অধিকাংশ বাঁধের কাজই অসমাপ্ত। আর বিলম্বে পিআইসি গঠন কাজ শুরু না হওয়ার অন্যতম কারণ।
এছাড়া প্রকাশ্যে গণশুনানির মাধ্যমে পিআইসি গঠনের কথা থাকলেও তা পালন করা হয়নি। স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে কৃষকদের বাদ দিয়ে অধিকাংশ পিআইসি গঠিত হয়েছে কর্মকর্তাদের পছন্দের এবং সরকার দলীয় লোকজন দিয়ে। গণমাধ্যমে বিভিন্ন রিপোর্ট, কৃষকদের মতামত এবং সরেজমিনে বিভিন্ন বাঁধ পরিদর্শন করে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি ও অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে।
অক্ষত বাঁধে পুনরায় বরাদ্দ, প্রয়োজনের চেয়ে অধিক বরাদ্দ যা হাওড়ের কিংবা কৃষকের কোনো কাজে আসবে না। এমন অনেক প্রকল্প আছে যেগুলো পুরাতন বাঁধ কেটে নতুন বাঁধ দেওয়া হচ্ছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
সংবাদ সম্মেলনে নেতারা আরও বলেন, নির্ধারিত সময়ের আর মাত্র ১১ দিন বাকি আছে। কিন্তু জেলার অধিকাংশ ক্লোজার এখনও উন্মুক্ত আছে। জেলা প্রশাসন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড ১২ জানুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত ৬৭% কাজের অগ্রগতি দাবি করলেও বাস্তবে তার চিত্র ভিন্ন। অদ্যাবধি ২৫% থেকে ৩০% কাজের অগ্রগতি হয়েছে বলে আমরা মনে করি। এ অবস্থায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সবকটি বাঁধের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়।
হাওরডুবি এবং ফসলহানি হলে এর দায় দুর্নীতিবাজ সরকার, প্রশাসন এবং পিআইসিকেই নিতে হবে। আর ফসলহানি হলে কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে।
লিপসন আহমেদ/এফএ/এমএস