টেবিলে পিস্তল রেখে পাঠদান করাতেন রায়হান শরীফ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৯:১০ পিএম, ০৫ মার্চ ২০২৪

টেবিলে পিস্তল রেখে পাঠদান করাতেন রায়হান শরীফ। শিক্ষার্থীরা ভয়ে এটা কাউকে বলেননি। তবে অন্য শিক্ষক ও কলেজ প্রশাসন কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। আমার ছেলে যদি মারা যেত তাহলে এর দায় কে নিতো? আমি এ শিক্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ আরাফাত আমিনের (তমাল) মা সেলিনা আক্তার এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন: ভাইভা চলাকালীন শিক্ষার্থীকে গুলি করলেন শিক্ষক

তিনি বলেন, তমাল, তনু আমার দুই সন্তান। অনেক স্বপ্ন নিয়ে তমালকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি করেছি। ওই শিক্ষক গুলি করার পর মোবাইল ফোনে তমাল আমায় বলেছিল পাগলা শিক্ষক আমার পায়ে গুলি করেছে। তখন আমরা দ্রুত বগুড়া থেকে চলে আসি।

সেলিনা আক্তার বলেন, হাসপাতালে আসার পর অধ্যক্ষকে বলেছি আমার ছেলে গুলিবিদ্ধ কেন? কেন ওই শিক্ষক আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করলেন। তারা সঠিক জবাব দেয়নি। আমার মতো অসংখ্য মা তার প্রিয় সন্তানদের এ কলেজে পড়তে পাঠিয়েছেন। কিন্তু আমার সন্তানদের নিরাপত্তা দেবে কে?

আরাফাত আমিন তমাল বগুড়া সদর উপজেলার নাটাইপাড়া ধানসিঁড়ি মহল্লার অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য আব্দুল্লাহ আল আমিনের ছেলে।

আরও পড়ুন: শিক্ষক রায়হানের শাস্তির দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

অন্যদিকে বিসিএস-৩৯ ব্যাচের চিকিৎসক মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক রায়হান শরীফ সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।

গুলিবিদ্ধ তমালের সহপাঠী মাসুম জাগো নিউজকে বলেন, রায়হান শরীফ পিস্তল নিয়ে ক্যাম্পাস ও ক্লাসে আসায় আমরা সবসময় ভয়ে থাকতাম। ক্লাসের টেবিলে পিস্তল রেখে পাঠদান করাতেন। আমরা কিছু বললে পরীক্ষায় ফেল করার ভয় দেখাতেন।

আরেক সহপাঠী আক্তারুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, রায়হান শরীফ মূলত কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক। কিন্তু তিনি গায়ের জোরে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগেও ক্লাস নিতেন।

আরও পড়ুন: শিক্ষক রায়হানের ফোনে প্রচুর অস্ত্রের ছবি, পিস্তল কেনেন লাখ টাকায়

এদিকে শ্রেণিকক্ষে পিস্তল নিয়ে পাঠদান করানোর বিষয়টি জানা নেই বলে জানিয়ে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান আব্দুল্লাহেল কাফি। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, পিস্তল টেবিলে রেখে ক্লাস নিতেন- এ বিষয়ে কোনো শিক্ষার্থী এর আগে আমাদের বলেনি।

এ প্রসঙ্গে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ আমিরুল হোসেন চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, এ ঘটনার আগে কোনো শিক্ষার্থী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দেয়নি। তবে এ ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এম এ মালেক/আরএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।