নড়াইলে মোটরসাইকেলে করে প্রচারণার হিড়িক!
ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নড়াইলের বিভিন্ন ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকেরা মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকাবাসী, প্রত্যক্ষদর্শী ও জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে জানা গেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরাই আচরণবিধি ভাঙছেন।
এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তবে প্রার্থীরা দাবি করেছেন, নাশকতা সৃষ্টিকারীদের প্রতিরোধ করতে গণসংযোগকালে তারা সমর্থকদের সঙ্গে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তৃতীয় ধাপে নড়াইল সদর উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ২৩ এপ্রিল ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সাতটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থীর সংখ্যা ২৮ জন। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আচরণবিধিতে যানবাহন ব্যবহার সংক্রান্ত বাধা-নিষেধ ১৩ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে কোনো ট্রাক, বাস, মোটরসাইকেল, নৌযান, ট্রেন কিংবা অন্য কোনো যান্ত্রিক যানবাহন সহকারে মিছিল বা মশাল মিছিল বা অন্য কোনো প্রকারের মিছিল বের করতে পারবে না কিংবা কোনো রূপ শোডাউন করতে পারবে না।
এলাকাবাসী জানায়, নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউপির নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. খশরুল আলম গত সোমবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে তার নির্বাচনী এলাকায় প্রায় ২০০ সমর্থক নিয়ে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করেন।
ওই ইউনিয়নের অপর চোরম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন পান্না জানান, বিষয়টি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও থানা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
এর আগের দিন সদর উপজেলার তুলারামপুর ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী বুলবুল আহম্মেদ ৭০-৮০টি মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দিয়েছেন। একইভাবে আউড়িয়া ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. পলাশ হোসেন, হবখালি ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. রিয়াজুল ইসলাম, মাইজপাড়ায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. জিল্লুর রহমানসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রার্থীরা প্রতিদিন ১৫-২০টি মোটরসাইকেল নিয়ে জনসংযোগ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানতে চাইলে মো. খশরুল আলম বলেন, শাহাবাদ ইউনিয়নটি জামায়াত-শিবিরের ঘাঁটি। এখানে নাশকতা সৃষ্টিকারীদের প্রতিরোধ করতে গণসংযোগকালে সমর্থকদের সঙ্গে নিতে বাধ্য হচ্ছি।
বুলবুল আহম্মেদ বলেন, গণসংযোগকালে মোটরসাইকেলের বহর নেয়া আমি নীতিগতভাবে অপছন্দ করি। তবে চলমার রাজনৈতিক অস্থিরতায় নিজেকে রক্ষা করার জন্য সমর্থকদের সঙ্গে নিতে হচ্ছে।
সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এটিএম শামীম মাহামুদ বলেন, শুনেছি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে উভয় প্রার্থীর সমর্থকেরা মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। তবে এ ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হাফিজুল নিলু/এসএস/আরআইপি