নড়াইলে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সংশয়
নড়াইলে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সংশয় দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের গণসংযোগ করতে দিচ্ছে না। গণসংযোগ করতে গেলে তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। এমনকি লাঞ্চিত করে ঘরের মধ্যে আটকে রাখছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রার্থী এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নড়াইল পৌরসভার সাবেক মেয়র জুলফিকার আলী মন্ডল শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে সদর উপজেলার মাইজপাড়া ইউনিয়নের মাইজপাড়া বাজারে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহাবুব মুর্শেদের পক্ষে গণসংযোগ করতে যান। এ সময় আওয়ামী লীগের দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. জিল্লুর রহমানের সমর্থকেরা তাদের লাঞ্ছিত করে বাজারের একটি দোকান ঘরে আটকে রাখে।
আউড়িয়া ইউনিয়নের বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মশিয়ার রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ইউনিয়নের মুলদাইড় এলাকায় গণসংযোগ করতে সাবেক ইউপি সদস্য মর্জিনা বেগমের বাড়ির কাছে পৌঁছালে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আমাকে ঘিরে ফেলে। গণসংযোগ করতে বাধা দেয়। পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে।
সদর থানার এএসআই শেখর চন্দ্র মল্লিক জানান, মশিয়ার রহমান অভিযোগ দিলে তাকে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
মাইজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহাবুব মুর্শেদ বলেন, জেলা সদর থেকে প্রতিদিন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে মোটরসাইকেল শোডাউন দিচ্ছে। আমাদের কর্মী সমর্থকেরা গণসংযোগ করতে ভয় পাচ্ছে। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা সংশয় রয়েছে।
নির্বাচনে সহিংসতার আশঙ্কা প্রকাশ করে হবখালি ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. রিয়াজুল ইসলাম টিংকু বলেন, যদি ভোটাররা কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে পারেন তাহলে নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী।
জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নড়াইল পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. জুলফিকার আলী মন্ডল বলেন, সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে কিনা তা নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে সংশয় রয়েছে। তিনি বলেন, শুক্রবার বিকেলে মাইজপাড়া ইউনিয়নের দলীয় প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগ করতে গেলে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের কয়েকজনকে লাঞ্ছিত করে এবং একটি দোকান ঘরে আটকে রাখে। তিনি দাবি করেন, পৌরসভার মতো ভোট কাটাকাটি যেন না হয়, প্রশাসনকেই সে পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
নড়াইল আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের ভোট আওয়ামী লীগের রিজার্ভ ভোট ব্যাংক হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। সেই ভরসাতেই রয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থিত প্রার্থীরা।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দীন খান নিলু বলেন, নড়াইলের মাটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। এখানকার মানুষ আওয়ামী লীগকে ভালোবাসেন। যে কোনো নির্বাচনে এখানকার মানুষ আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও এর ব্যতিক্রম ঘটবে না।
নির্বাচনে সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে যা কিছু প্রয়োজন তা করা হবে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
হাফিজুল নিলু/এসএস/এমএস