মাকে গাছে বেঁধে রেখে ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফেনী
প্রকাশিত: ০১:৩৩ পিএম, ১৫ এপ্রিল ২০২৪

টাকা চুরির অভিযোগে মাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নূর মোহাম্মদ (১৮) নামে এক তরুণকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তা মঈন উদ্দিনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

শনিবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠান নগর ইউনিয়নের বাথানিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য (১৪ এপ্রিল) রোববার ফেনী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহত নুর মোহাম্মদ নোয়াখালীর সুধারাম থানার আন্দার চর গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে। সে ওই বাড়িতে দীর্ঘদিন যাবত কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করতেন। গ্রেফতার মঈন উদ্দিন বাথানিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে।

নিহত নুর মোহাম্মদের মা বিবি খতিজা আক্তার জানান, চার বছর আগে অভাবের কারণে নুর মোহাম্মদকে ব্যাংক কর্মকর্তা মঈন উদ্দিনের বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে দিয়ে যান তিনি। ছেলেটির মাসিক বেতন ধরা হয়েছিল দুই হাজার টাকা। চার বছরে তাকে কখনো ছুটি দিত না ওই পরিবার। সেই ক্ষোভে ২৭ রমজান ওই বাসা থেকে ৮০ হাজার টাকা ভর্তি একটি খাম নিয়ে নিজ বাড়ি চলে যান নুর মোহাম্মদ।

এরপর থেকে মোবাইল ফোনে হুমকি দিতে থাকেন ব্যাংক কর্মকর্তার পরিবারের সদস্যরা। তাদের অব্যাহত হুমকিতে ঈদের পরদিন ছেলেকে নিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তার বাড়িতে হাজির হন তিনি। একই সঙ্গে চুরি করে নেওয়া টাকাগুলোও ফেরত দেন।

মাকে গাছে বেঁধে রেখে ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা

তিনি আরও জানান, বাড়িতে ঢোকা মাত্রই ব্যাংক কর্মকর্তার চার ভাই মিলে তার ছেলেকে মারধর শুরু করেন। বাঁধা দিলে তাকেও মারধর করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন তারা। এরপর সারারাত কয়েক দফায় এবং পরদিনও তার ছেলেকে মারধর করা হয়। মারধরের একপর্যায়ে শনিবার বিকেলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন নুর মোহাম্মদ।

বিবি খতিজা বলেন, আমার ছেলের অন্যায় হলে, তারা তাকে পুলিশে দিতো। আমি তাদের কাছে আমার ছেলের জীবন ভিক্ষা চেয়েছি। তবু তাদের মন গলেনি। এভাবে নির্যাতন করে আমার চোখের সামনেই ছেলেটিকে মেরে ফেলল। আমি এ হত্যার বিচার চাই।

ছাগলনাইয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান ইমাম বলেন, মরদেহের পিঠ, কোমর, হাত-পাসহ পুরো শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ করে আরও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেছেন। এজহারভুক্ত আসামি মঈন উদ্দিনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মারধরের কথা স্বীকার করেছেন।

আবদুল্লাহ আল-মামুন/এনআইবি/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।