উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় শেরপুরে বিএনপির ছয় নেতাকে শোকজ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শেরপুর
প্রকাশিত: ০৯:৩৮ এএম, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় শেরপুরে বিএনপির ছয় নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এই কারণ দর্শানোর নোটিশ তাদের পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদুল হক রুবেল। নোটিশে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কারণ ব্যাখ্যা করে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নোটিশপ্রাপ্তরা হলেন- শেরপুর জেলা বিএনপির সদস্য ও ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আমিনুল ইসলাম বাদশা, ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মেহেদী হাসান মামুন, শ্রীবরদী উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জোবায়দুল ইসলাম রাজন, শ্রীবরদী পৌর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য আব্দুর রশিদ বাদশা, শ্রীবরদীর গোসাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সাদ্দাম সৌমিত মুন ও শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবিএম সাইফুল হক মালেক।

এদিকে বিকেলে শেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদুল হক রুবেল ফেসবুকে তার ব্যক্তিগত আইডিতে এই ছয়জনের কারণ দর্শানোর নোটিশ পোস্ট করলেও একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেউই হাতে এখনো কারণ দর্শানোর নোটিশ পাননি। সবাই ফেসবুকের মাধ্যমেই অবগত হয়েছেন।

এ বিষয়ে শ্রীবরদী উপজেলার গোসাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সাদ্দাম সৌমিত মুন বলেন, আমি এখনো হাতে কোনো হার্ডকপি পাইনি। মেসেঞ্জারে আমাকে অনেকেই সফট কপি পাঠিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা স্থানীয়ভাবে অনেক আগে থেকেই নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত। শেষ মুহূর্তে এসে দলের কেন্দ্রীয় এমন সিদ্ধান্তে আমরা অনেক চাপে পড়েছি। স্থানীয়ভাবে অনেক ব্যয় করতে হয়েছে আমাদের। তাই এখান থেকে পিছনে ফিরে যাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব না। তাই সিদ্ধান্ত যাই হোক, নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

এদিকে শেরপুর জেলা বিএনপির সদস্য ও ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আমিনুল ইসলাম বাদশা বলেন, ফেসবুকে অনেকেই পোস্ট করেছেন, আমি এখনো কোনো কপি পাইনি।

তিনি বলেন, এবার কোনো দলীয় প্রতীক নেই। আমার রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকতেই পারে, তবে সকল সিদ্ধান্ত মানতেই হবে এমন কোনো কথা নেই। আমি জনগণের চাহিদায় প্রার্থী হয়েছি, যেকোনো অবস্থাতেই আমি নির্বাচন করবো। কোনো বহিষ্কারাদেশ আসলেও আমি নির্বাচন থেকে সরে যাবো না।

শেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক কোনো স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও বিএনপি অংশ নিচ্ছে না। বিএনপি ও সমমনা নেতাকর্মীদের মধ্যে যারা দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, তাদের আজ কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি তারা কারণ ব্যাখ্যা না করতে পারে, তাদের বহিষ্কারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি মাহমুদুল হক রুবেল বলেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করে যারা আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন, তাদের সবাইকেই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে যদি তারা তাদের ব্যাখ্যা না দিতে পারেন বা তাদের ব্যাখ্যা যদি কেন্দ্রের স্থায়ী কমিটির মনপুতঃ না হয়, তাহলে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

ইমরান হাসান রাব্বী/এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।