বিমান বিধ্বস্তে পাইলট নিহত

একমাত্র সন্তান ছিলেন আসিম জাওয়াদ, কান্না থামছে না মায়ের

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মানিকগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৮:২৯ পিএম, ০৯ মে ২০২৪

চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত আসিম জাওয়াদের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান ছিলেন তিনি। তার মৃত্যুর খবরে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা নিলুফা খানম।

মানিকগঞ্জ শহরের নগর ভবন সড়কের গোল্ডেন প্লাজায় আসিম জাওয়াদের বাসা। সেখানে থাকেন চিকিৎসক বাবা আমান উল্লাহ ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মা নিলুফা আক্তার খানম। আর স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে কর্মস্থল চট্টগ্রামে থাকতেন আসিম।

দুপুরে আসিম জাওয়াদের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, তার মা ছেলের কথা মনে করে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন স্বজনরা। চোখে পানি ধরে রাখতে পারেননি তারাও।

একমাত্র সন্তান ছিলেন আসিম জাওয়াদ, কান্না থামছে না মায়ের

আসিম জাওয়াদের মা নিলুফা খানম আর্তনাদ করে বলছিলেন, ‘আমার ছেলে প্রতিদিন খোঁজ নেয় আমি খেয়েছি কি না, গোসল করেছি কি না। কই আজ তো খোঁজ নিচ্ছে না? আজ কেন কথা বলছে না? আমি আমার ছেলের কাছে যাবো। আমাকে ঢাকায় নিয়ে চলো।’

আরও পড়ুন:

কিছুক্ষণ চুপ থেকে আবার বিলাপ করে বলতে থাকেন, ‘আমার আসিমের কত স্বপ্ন। কত পুরস্কার পেয়েছে। সে তো কারও ক্ষতি করে নাই। তাহলে এ অবস্থা হলো কেন? আল্লাহ তুমি এমন করলা কেন?’

আসিম জাওয়াদের মামা বাংলাদেশ বেতারের মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি সুরুজ খান জানান, দুর্ঘটনার পর তাদের কাছে খবর আসার পর পরিবারের সবাই পাগলপ্রায়। কে কাকে সান্ত্বনা দেবে, সবাই শোকাহত।

তিনি জানান, আসিমের ছোটবেলা থেকেই পাইলট হওয়ার স্বপ্ন ছিল। সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর প্রশিক্ষণ শেষে বিমানবাহিনীতে যোগ দেয়। প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃতিত্বের সাক্ষর রেখেছে মেধাবী আসিম। পেশাগত জীবনে পেয়েছে সোর্ড অব অনারসহ বিভিন্ন সম্মাননা। পাইলট হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে আসিমের। কিন্তু আরও বড় হওয়ার আশা অকাল প্রয়াণে ভঙ্গ হলো।

একমাত্র সন্তান ছিলেন আসিম জাওয়াদ, কান্না থামছে না মায়ের

২০১১ সালে আসিম জাওয়াদ চাকরিতে যোগদান করেন। ব্যক্তিগত জীবনে এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক তিনি।

শোকাহত পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে আসা মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল বলেন, ‘আসিম জাওয়াদ সম্ভাবনাময় একটি ছেলে ছিল। তার মৃত্যুতে সবাই শোকাহত। এমন মেধাবী সন্তানকে হারিয়ে পরিবারসহ মানিকগঞ্জবাসীর অপূরণীয় ক্ষতি হলো।’

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১০ মে) দুপুর নাগাদ আসিম জাওয়াদের মরদেহ মানিকগঞ্জে পৌঁছাবে। জানাজা শেষে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন স্থানীয় সেওতা কবরস্থানে।

বি এম খোরশেদ/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।