দুধ দিয়ে গোসল করানো হলো নাবিক সাব্বিরকে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ০৩:৩৮ এএম, ১৭ মে ২০২৪
দেশে ফিরে মনে হচ্ছে আমার নতুন জন্ম হয়েছে

সোমালিয়ার জলদস্যুদের থেকে মুক্ত টাঙ্গাইলের নাবিক সাব্বিরের বাড়িতে আজ ঈদের আনন্দ। মুক্ত হওয়ার পর থেকেই তাকে কাছে পাওয়ার অপেক্ষায় সাব্বিরের বৃদ্ধ মা-বাবা, বোন, বন্ধুসহ স্বজনরা। ফিরে পাওয়ার আনন্দে তাই দুধ দিয়ে গোসল করিয়ে ঘরে তুললেন নাবিক সাব্বিরকে। ৬৫ দিন পর বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সকালে টাঙ্গাইল শহরের আদালতপাড়ার বোনের বাসায় ওঠেন সাব্বির।

সাব্বিরকে পেয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঈদের উৎসব আমেজ বিরাজ করছে। সাব্বির ফিরে আসার খবর ছড়িয়ে পড়লে আত্মীয়স্বজন বন্ধু ও প্রতিবেশীরা তাকে এক নজর দেখার জন্য বাড়িতে ভিড় জমান। সাব্বিরকে ফিরে পাওয়ার আনন্দে আর বিপদ আপদ মুক্ত থাকার কামনায় দুধ দিয়ে গোসল করিয়ে ঘরে তোলেন দুই খালা ও বোন।

সাব্বির জানান, ‘যখন আমাদের জলদস্যুরা তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন, তখন থেকে তাদের কাছে বন্দি জীবনযাপন করছিলাম। তবে জাহাজে আমরা যে যার কাজ ঠিকঠাক মত করেছি, রোজা রেখেছি, নামাজও পড়েছি।

আরও পড়ুন:
সোমালিয়ান জলদস্যুদের দখলে বাংলাদেশি জাহাজ, ২৩ নাবিক জিম্মি 
ফুরোলো অপেক্ষা, পরিবারের কাছে ফিরলেন নাবিকরা 
দেশে ফিরে মনে হচ্ছে আমার নতুন জন্ম হয়েছে 

তিনি জানান, ভয়ের বিষয় ছিল, জলদস্যুরা সময় অসময়ে ফাঁকা গুলি ছুড়তো, সে সময় আমরা ভীষণ আতঙ্কিত হতাম। নেভির জাহাজ আমাদের জাহাজের আশপাশে আসলে তারা আমাদের সে সময় মুভ করতে দিত না।

তিনি আরও জানান, ছাড়া পেয়ে সেই ঈদের আনন্দটাই এখন আল্লাহ যেন দিয়েছেন। আমাদের ফিরিয়ে আনতে সিও স্যারসহ যারা গুরুত্বর্পূণ ভূমিকা রেখেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।

sabbir.jpg-0

সাব্বিরের বোন মিতু আক্তার বলেন, এখন আমার ভাই ফিরে এসেছে, আমরা অনেক খুশি। ওকে দুধ দিয়ে গোসল করিয়ে ঘরে তুলেছি। ভবিষ্যতে যেন আর ওর বিপদ না আসে।

গত (১৪ এপ্রিল) ভোরে জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হন এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজসহ ২৩ নাবিক। এরপর জাহাজটি পৌঁছায় দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে। সেখান থেকে মিনা সাকার নামের আরেকটি বন্দরে চুনাপাথর ভর্তি করার পর চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। সব মিলিয়ে ৬৫ দিন পর মুক্ত হয়ে নাবিকরা বাংলাদেশের স্বজনদের কাছে ফিরলেন।

sabbir.jpg-01

সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে ভারত মহাসাগর থেকে জিম্মি হন বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ নাবিক। তাদের মধ্যে ছিলেন টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজলোর সহবতপুর ইউনয়িনরে ডাঙা ধলাপাড়া গ্রামের হারুন অর রশিদের ছেলে সাব্বির। টাঙ্গাইল শহরের কাগমারি এম এম আলী কলেজ থেকে ২০১৬ সালে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমিতে। সেখান থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করে সর্বশেষ ২০২২ সালের জুন মাসে এমভি আব্দুল্লাহ নামক পণ্য বহনকারী একটি জাহাজে মার্চেন্ট কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি নেন সাব্বির।

আরিফ উর রহমান টগর/জেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।