সিরাজগঞ্জ শিল্পপার্ক
তবুও চীন ভ্রমণে গেলেন তারা
সাধারণত কোনো প্রকল্পের সরঞ্জাম কেনার আগে দেখতে যাওয়াকে ‘ফ্লোর ইন্সপেকশন’ বলা হয়। তবে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন এবং পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (পিজিসিএল) আট কর্মকর্তা করেছেন ঠিক উল্টোটা। সিরাজগঞ্জ বিসিক শিল্পপার্কে গ্যাস সংযোগ লাইন নির্মাণের সরঞ্জাম কেনার পর ‘ফ্লোর ইন্সপেকশনে’ সরকারি খরচে চীনে গেছেন তারা।
শুক্রবার (৫ জুলাই) দুপুর ২টায় চীনের উদ্দেশ্যে তারা রওয়ানা দেন। দীর্ঘ কয়েক মাস আগে চীন থেকে সরঞ্জাম আমদানির পর সরকারি খরচে এ বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে উঠেছে নানান প্রশ্ন।
প্রকল্প কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক দফায় বাড়িয়ে মোট ৭১৯ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে যমুনা নদীর তীরে ‘সিরাজগঞ্জ বিসিক শিল্পপার্ক’ নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে গ্যাস-সংযোগের জন্য পাইপলাইন নির্মাণ বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ কোটি ১৭ লাখ টাকা। ঢাকার ডন কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান গতবছরের ডিসেম্বর থেকে চার কিলোমিটার পাইপলাইনের নির্মাণকাজ শুরু করেছে। দরপত্র অনুযায়ী ১৬ ইঞ্চি ডায়া, চার কিলোমিটার ৩৫০ পিএসআইজি গ্যাস পাইপলাইন ফিটিংস এবং কোটিং উপকরণসহ আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম অনেক আগেই চীন থেকে আমদানি করেছেন তারা। এরইমধ্যে ৭৫ শতাংশ কাজও সম্পন্ন হয়েছে।
চীনে সরঞ্জাম কেনার ‘ফ্লোর ইন্সপেকশনে’ যাওয়া কর্মকর্তারা হলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সিস্টেম অ্যানালিস্ট কবির উদ্দিন, পিজিসিএলের মহাব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলাম, শৈলজা নন্দা বসাক ও শাহিনুর আলম, উপ-মহাব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম ও এইচ এম জুলফিকার, ব্যবস্থাপক আক্তারুজ্জামান খান ও অলি উদ্দিন এবং সহকারী প্রকৌশলী কিশলয় মিত্রা।
আরও পড়ুন
পিজিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) সাহিনুর আলম সই করা এক পত্রে চীন ভ্রমণের নিমিত্তে ৫ থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত ১২ দিনের জন্য (যাতায়াতসহ) ৪ জুলাই এক ছাড়পত্রের অনুমোদন দেওয়া হয়। যা ওইদিন বিকেল থেকে কার্যকর হয়েছে। এই চীন ভ্রমণে মোট ৯ সদস্যের দলের মধ্যে মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) সাহিনুর আলম নিজেও রয়েছেন।
পিজিসিএল সূত্র জানায়, গত ১৫ মে সরকারি আদেশে (জিও) এই বিদেশ সফরের অনুমোদন দেওয়া হয়। জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের উপসচিব (বাজেট অধিশাখা) খাদিজা তাহেরা ববি এতে সই করেন। এতে বলা হয়, ৩০ মে থেকে ১০ জুন পর্যন্ত অথবা তার কাছাকাছি কোনো সময়ে ভ্রমণকালসহ মোট ১২ দিন তারা এই পরিদর্শনে সময় কাটাতে পারবেন। তবে পুরো জুনে না গেলেও ৫ জুলাই চীন ভ্রমণে গেলেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিজিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) সুজাত আলী ফোনে জাগো নিউজকে বলেন, সরকারি আদেশ বা বিধিনিষেধ মেনে চলা আমাদের সবার নৈতিক দায়িত্ব। তবে সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কেন বা কীভাবে এই বিদেশ সফর বহাল করা হলো বিষয়টি আমি অবগত নই।
চীন ভ্রমণের বিষয় জানতে পিজিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) সাহিনুর আলমের হোয়াটসঅ্যাপ ও মোবাইলফোনে খুদেবার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এম এ মালেক/এসআর/জিকেএস