রাতের আঁধারে ১৫ শতক ফলন্ত শিমগাছ কেটে দিলো দুর্বৃত্তরা
পাবনার ঈশ্বরদীতে রাতের আঁধারে ১৫ শতক ফলন্ত শিম গাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে এক লাখ টাকার অধিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ওই কৃষক।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের বাঘহাছলা গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে রবিউল ইসলাম ৫০ শতক জমিতে আগাম শিমের আবাদ করেছেন। এবারের দফায় দফায় প্রবল বর্ষণের ফলে তার শিমের জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে জমি পরিচর্যা করার পর এখন শিমের ফলন শুরু হয়েছে। রোববার (২০ অক্টোবর) দিবাগত রাতের কোনো এক সময় দুর্বৃত্তরা ৫০ শতক শিম ক্ষেতের মধ্যে ১৫ শতক জমির শিম গাছের গোড়া কেটে দিয়েছে।
কৃষক এনামুল হক এলিন বলেন, আগাম জাতের শিম চাষে কৃষকদের ব্যাপক খরচ হয়। এবার অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে খরচ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। যে ১৫ শতক জমির শিম গাছ কেটে দিয়েছে এই জমি আবাদ করতে প্রায় ৩০-৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কয়েকদিন হলো জমি থেকে শিম উঠানো শুরু হয়েছে। যে জমির শিম গাছ কেটে দিয়েছে ওই জমি অন্য জমির চেয়ে উঁচু ও ফলনও ভালো হয়েছিল। ওই জমি থেকে কমপক্ষে ১ লাখ টাকার শিম বিক্রি করতে পারতো।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক রবিউল ইসলামের বড় ভাই মনিরুল ইসলাম স্বপন জাগো নিউজকে বলেন, ৫০ শতক জমিতে শিমের আবাদ করেছে আমার ছোট ভাই। সোমবার সকালে জমি থেকে প্রায় দেড় মণ শিম সংগ্রহ করেছে। সকালে রোদ বাড়ার পরপর দেখা যায় শিমের ডগা নুইয়ে পড়ছে। পরে দেখা যায় ১৫ শতক জমির শিম গাছ কেটে দেওয়া হয়েছে। শিম গাছ কাটার পেছনে আমরা একজনকে সন্দেহ করছি। কারণ তার সঙ্গে এক সপ্তাহ আগে আমার ছোট ভাইয়ের তর্কাতর্কি হয়েছে। সে ইতোপূর্বে শিমসহ বিভিন্ন ফসল চুরির সঙ্গে জড়িত ছিল। এবারও শিম চুরি নিয়ে তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছিল। এ ব্যাপারে গ্রামের মাতবরদের জানিয়েছি তারা সুষ্ঠু বিচার করবেন আশা করছি।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, জমি থেকে প্রায়ই শিম চুরি হয়। এজন্য রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আমি শিম ক্ষেতে গিয়েছিলাম। প্রায় সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শিম ক্ষেতে ছিলাম। তখনও শিম গাছ ভালো ছিল। ভোর থেকে চারজন শ্রমিক মিলে ক্ষেত থেকে শিম তোলা শুরু করি। সকালে সূর্য ওঠার পর দেখতে পাই শিম গাছের ডগা ও পাতা নুইয়ে পড়ছে। পরে লক্ষ্য করে দেখি শিম গাছের গোড়া কেটে দেওয়া হয়েছে। যে ১৫ শতক জমিতে ফলন ভালো হয়েছে সেই গাছগুলো কেটে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ গ্রামের ইকবাল হোসেন (৩৫) নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে কয়েকদিন আগে শিমচুরি নিয়ে আমার তর্কবির্তক হয়েছিল। সে ইতিপূর্বেও শিম, কপি, ঢ্যাঁড়শসহ বিভিন্ন সবজি চুরি করে ধরা পড়েছিল। ক্ষেত দেখতে এলাকার মুরব্বীরা এসেছিল। তাদের কথামতো আমি থানায় কোনো ধরনের অভিযোগ বা জিডি করিনি। তারা এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন।
অভিযুক্ত ইকবাল হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এখন সিরাজগঞ্জে আছি। সোমবার ভোরে এখানে এসেছি। শিম গাছ কাটার বিষয়ে আমার কোনো কিছু জানা নেই।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার জাগো নিউজকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আমাদের অফিসে এসেছিলেন। এ ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো।
শেখ মহসীন/এফএ/জেআইএম