চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে আপেল-আঙুর-মাল্টা

মৌসুমি ফলে বাজার ভরপুর। এসব ফলের চাহিদা ও সরবরাহ দুটোই বেশি। দেশি ফলের ভিড়ে আমদানিকৃত ফলের বিক্রিতে ভাটা পড়লেও দামে এর প্রভাব নেই। বরং আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে আমদানি করা ফল। কিছু ফল দামের অপরিবর্তিত থাকলেও উল্টো দাম বেড়েছে মাল্টা ও কমলার। এ নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
বিক্রেতারা বলছেন, বন্দরে সমস্যা তৈরি হওয়ায় আড়তে (পাইকারি বাজার) কয়েকটি ফলের সরবরাহ নেই। এতে বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে ফল। যার প্রভাব পড়ছে খুচরায়।
আর ক্রেতারা বলছেন, সম্প্রতি ডেঙ্গুসহ নানা রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ফলের। বিশেষ করে মাল্টা ও কমলার বাড়তি দাম চাওয়া হচ্ছে।
শনিবার (৫ জুলাই) রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় খুচরা বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
মগবাজার, মধুবাগ, রামপুরা, মালিবাগ, খিলগাঁও ও বাসাবো এলাকায়, আগের মতোই চড়া দামে সবুজ আপেল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায়। গালা আপেলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা দরে। আঙুর (লাল) কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা।
বিক্রেতারা বলছেন, আঙুরের দাম কেজিতে ৫০ টাকা কমেছে। দুই সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি আঙুর বিক্রি হয়েছিল ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকার মধ্যে। এসব বাজারে আনার বিক্রি হচ্ছে (আকারভেদে) ৩৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে।
তবে সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়তি রয়েছে মাল্টা ও কমলার। এসব এলাকার অধিকাংশ দোকানেই কমলার উপস্থিতি নেই, দু’একটি দোকানে থাকলেও ৩৬০ থেকে ৩৮০ টাকা টাকা চাওয়া হচ্ছে। যেগুলো কিছু দিন আগে ২৭০ টাকা থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে ছিল, এমনটা বলছেন ক্রেতারা। আর মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা থেকে ৩২০ টাকা কেজি দরে।
আরও পড়ুন:
মগবাজার এলাকার খুচরা ফল বিক্রেতা সোহাগ জাগো নিউজকে বলেন, বাজারে মাল্টা ও কমলার সরবরাহ কম। কমলার সরবরাহ নেই বললেই চলে। বন্দরে জটিলতার তৈরি হওয়ার ফলে অনেক পণ্য খালাস হয়নি, এ কারণে আড়তে (পাইকার) দাম বেড়েছে। আমরা বেশি দামে কিনে আনায় বেশি দামেই বিক্রি করছি। পাইকারি ও খুচরায় আহামরি দামের পার্থক্য নেই বলেও জানান এ বিক্রেতা। একই কথা বলেন, মধুবাগের বিপ্লব, রামপুরার হাসান ও বাসাবো এলাকার সোহেল।
একই ধরনের কথা বলে বিক্রেতারা সোহেল জাগো নিউজকে বলেন, সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে, তবে তার আগ পর্যন্ত দাম বাড়তি থাকবে আড়তে। মাল্টার কার্টুনে ৪০০ টাকা বেড়েছে যেখানে থাকে সাড়ে ১৩ কেজি। আজ নাকি আরও বেড়েছে। তাহলে আমার কি করার আছে এখানে।
তবে বিক্রেতার দাবির সঙ্গে একমত নন ক্রেতারা। মালিবাগ এলাকায় সালেহা নামে এক ক্রেতার সঙ্গে কথা হয়। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গু ও করোনার প্রভাব বাড়ছে। এতে মাল্টা ও কমলার বিক্রি বেড়েছে। আমি নিজেও এই দুই ফল কিনছি দুই সপ্তাহ ধরে। এক দিন পর পর ফল কিনতে আসছি কিন্তু এই দুই ফলের (মাল্টা ও কমলা) কেজিতে ১০ টাকা করে বাড়ছে।
শফিউল্লা সিকদার নামে এক ক্রেতা জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখন করোনা আক্রান্তের হার বেশি, ডেঙ্গু রোগীও বেড়েছে। এই দুই রোগে আক্রান্ত হলে মানুষ মাল্টা, কমলা ও পাতি লেবু বেশি খেয়ে থাকেন। এতে বিক্রি বেড়ে যায়, তখনই দাম বাড়িয়ে দেন বিক্রেতা। যেমনটা এখন হয়েছে।
ইএআর/এসএনআর/এমএস