প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট খাতে ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দেশের ক্ষতিগ্রস্ত উৎপাদন ও রফতানিকারকদের জন্য বিশেষ ঋণ সহায়তা দিতে প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট পুনঃঅর্থায়ন স্কিম নামের ৫ হাজার কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তিন বছর মেয়াদী এ স্কিমের গ্রাহক পর্যায়ে সর্বোচ্চ ঋণের সুদহার হবে ৬ শতাংশ।
সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে নজিরবিহীন স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বিশ্বব্যাপী রফতানি বাণিজ্য ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যান্য খাতের মতো বাংলাদেশেও রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের উৎপাদন কমে গেছে এবং বাতিল হয়েছে অনেক রফতানি আদেশ। ব্যাহত হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন। রফতানি কার্যক্রম অব্যাহত রেখে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও অর্থনীতিতে গতিশীলতা ফেরাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে। তহবিলের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে তিন বছর।
যেকোনো খাতের রফতানিমুখী প্রতিষ্ঠানের জন্য এই তহবিল উন্মুক্ত থাকবে। ঋণ বিতরণের বিষয়টি ব্যাংক গ্রাহক সম্পর্কের আলোকে কেস টু কেস ভিত্তিতে বিবেচনা করা হবে। গ্রাহক পর্যায়ে এই ঋণের সুদহার হবে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের শিডিউল অব চার্জেস নীতিমালার বাইরে গ্রাহকের কাছ থেকে কোনো ধরনের ফি আদায় করা যাবে না।
একজন গ্রাহককে সর্বোচ্চ এক বছর ১ বছর মেয়াদী ঋণ দিতে পারবে ব্যাংক। তবে ব্যাংক গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে একাধিকবার এই ঋণ দেয়া যাবে। গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের মেয়াদ যাই হোক না কেন জাহাজীকরণের তারিখের পর সর্বোচ্চ ১২০ দিনের মধ্যে অংশগ্রহণকারী ব্যাংককে পুনঃঅর্থায়ন করা হবে। যা মেয়াদ শেষে সুদসহ এককালীন পরিশোধ যোগ্য হবে।
তবে বিশেষ ক্ষেত্রে কোনো কারণে রফতানি মূল্য প্রাপ্তিতে দেরি হলে যথাসময়ে সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্ট বরাবর আবেদন করতে হবে। আবেদনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন গ্রহণ সাপেক্ষে পরিশোধের সময় সর্বোচ্চ ৬০ দিন বৃদ্ধি করতে পারবে।
প্রতিটি নিশ্চিত রফতানি আদেশ বা ঋণপত্রের মূল্য থেকে ব্যাক-টু-ব্যাক ঋণপত্রের মূল্য, এক্সেসরিজের জন্য অর্থায়ন বাবদ অর্থ এবং এ সংক্রান্ত অন্যান্য অর্থায়ন বাবদ অর্থ বাদ দিয়ে অবশিষ্ট মূল্যের উপর নীতিমালা অনুযায়ী ব্যাংক গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট প্রদান করা হবে। প্রতি জাহাজীকৃত রফতানি মূল্যের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা বিবেচ্য হবে। তবে পণ্য জাহাজীকরণের পরেই আলোচ্য পুনঃঅর্থায়ন সুবিধার দাবি বিবেচনা করা হবে।
এসআই/এমএসএইচ/এমএস