রিজার্ভ শিগগির শক্ত অবস্থানে ফিরবে: অর্থমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৪১ পিএম, ১২ জানুয়ারি ২০২৩
ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল ও এলএনজির দাম কমতে থাকায় মূল্যস্ফীতির চাপ চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেন, ‘সরকার অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসপণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করেছে। এ পদক্ষেপ নেওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও খুব দ্রুত আগের মতো শক্ত অবস্থানে ফিরবে।’

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের বাজেট বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদনে তিনি এ দাবি করেন।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, চলতি (২০২২-২৩) অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রাজস্ব আয়, রেমিট্যান্স, রপ্তানি প্রবৃদ্ধি, এডিপির ব্যয়, ব্যাপক মুদ্রা সরবরাহসহ মৌলিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক চালকসমূহের অবস্থান সন্তোষজনক। আমদানি ও রপ্তানি আয়ে উভয়ক্ষেত্রে ধণাত্মক প্রভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। চলতি অর্থবছর সরকারের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জিত হবে বলে আশা করছি।

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘কোভিড-১৯ পরবর্তীসময়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক হয়ে আসা এবং মধ্যবর্তী পণ্য ও মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি বেড়ে যাওয়ায় আমদানি ব্যয় গত অর্থবছরের একই সময়ে অনেক বেড়েছিল। বর্তমানে বিলাসপণ্যের আমদানি পরিহার করা ও সরকারের কৃচ্ছ্রসাধন নীতির কারণে আমদানি খরচ কমেছে।’

আরও পড়ুন>> এই মুহূর্তে নতুন পে-স্কেল বা মহার্ঘ্য ভাতা নয়: সংসদে অর্থমন্ত্রী

তিনি বলেন, ‘গত অর্থবছরের প্রথম তিনমাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে আমদানি ঋণপত্র ৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ কম খোলা হয়েছে। বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ছিল ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। সেই তুলনায় ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর সময়ে বেড়ে হয়েছে ৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ। অন্যদিকে পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি সেপ্টেম্বর ২০২১-এর ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশের তুলনায় সেপ্টেম্বর ২০২২-এ ৯ দশমিক ১০ শতাংশ হয়েছে।’

মুস্তফা কামাল বলেন, ‘কোভিড পরিস্থিতির থেকে অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়ালেও চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী তেল, গ্যাসসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য এবং গম, ভোজ্যতেলসহ প্রধান খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে। ফলে উন্নত দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি সৃষ্টি হয়েছে। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নানান বিরূপ প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা থেকে বাংলাদেশও মুক্ত নয়।’

আরও পড়ুন>> ব্যাংকের অবস্থা কোথায় খারাপ লিখিত দেন: অর্থমন্ত্রী

চলতি অর্থবছর রাজস্ব আহরণ আশানুরূপ হারে বাড়বে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আর্থিক খাতে খেলাপি ঋণের মাত্রা কমিয়ে আনাসহ আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা করা ও কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়ানোর মাধ্যমে বিনিয়োগের গতিধারা সমুন্নত রাখতে সরকার সচেষ্ট।’

চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘এতে আশাবাদী হওয়ার পূর্ণ সুযোগ আছে। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এবার জুলাই প্রান্তিকে রাজস্ব আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সরকারি ব্যয়ও বেড়েছে। রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি আমদানি ব্যয়ের প্রবৃদ্ধি কমেছে। চলমান মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি অত্যন্ত আশাবাদী মানুষ। আমাদের অর্থনীতির অন্তর্নিহিত শক্তি, বিভিন্ন বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ অভিঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের নেওয়া বাস্তবমুখী পদক্ষেপের ফলে অর্থনীতির প্রত্যাশিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও বিরূপ প্রভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। এসব বৈরী পরিস্থিতি মোকাবিলা করে দেশ সামষ্টিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সামনে এগিয়ে যেতে পারবে বলে আশা করছি।’

এইচএস/এএএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।