দেড়শ টাকার কম দামি জুতা-স্যান্ডেলে ভ্যাট অব্যাহতি পুনর্বহাল দাবি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৩৭ পিএম, ২৫ জানুয়ারি ২০২৫
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে পাদুকা প্রস্তুতকারক সমিতি

আগে ১৫০ টাকার চেয়ে কম দামি প্লাস্টিক ও রাবারের তৈরি হাওয়াই চপ্পল এবং পাদুকায় কোনো ভ্যাট ছিল না। এখন প্লাস্টিক ও রাবারের তৈরি সব ধরনের জুতা-স্যান্ডেলের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করেছে সরকার। ফলে নিম্নবিত্ত মানুষের এসব এসব জুতা-স্যান্ডেলও পড়লো ভ্যাটের আওতায়।

এতে একদিকে যেমন মূল্যবৃদ্ধিতে চাপে পড়ছে নিম্নবিত্ত মানুষ, অন্যদিকে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি পাদুকা শিল্প। এ অবস্থায় ১৫০ টাকার চেয়ে কম দামি সব জুতা-স্যান্ডেলে ভ্যাট অব্যাহতি পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

শনিবার (২৫ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় বাংলাদেশ পাদুকা প্রস্তুতকারক সমিতি।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস রানা বলেন, দেশে দেড়শ টাকার নিচে পাদুকা তৈরি করছে এমন ৫ শতাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠান নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্তদের চপ্পল এবং পাদুকা তৈরি করে। এগুলো খুব ছোট প্রতিষ্ঠান। সারা দেশের ব্যবহৃত পাদুকা রিসাইকেল করে এগুলো তৈরি করা হয়। এখন হুট করে এমন সিদ্ধান্তে এ খাত মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।  

সমিতির উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বেলাল বলেন, চপ্পল এবং পাদুকার ওপর ১৫ ভ্যাট আরোপ করার প্রস্তাব অযৌক্তিক। এটি কার্যকর হলে এই সাশ্রয়ী পণ্য সাধারণ জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। শ্রমজীবী, দিনমজুর, কৃষক, রিকশা-ভ্যান চালক এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠী পাদুকা ব্যবহারে আনাগ্রহী হয়ে যাবে। এতে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়বে।

সংগঠনটির সহ-সভাপতি আশরাফ উদ্দিন বলেন, এই পণ্যের মূল কাঁচামাল হচ্ছে পরিত্যক্ত রাবার ও প্লাস্টিকের চপ্পলজাতীয় অপচনশীল দ্রব্যাদি। যেগুলো দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ছিন্নমূল মানুষ ও অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। সেটা রিসাইকেল করে পুনরায় উৎপাদন করা হয়। এতে পরিবেশের ভারসাম্য তথা জমির উর্বরতা বৃদ্ধি এবং জলবদ্ধতা রোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। এতদিন ভ্যাট অব্যাহতির ফলে এ রিসাইক্লিং কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত হচ্ছিল। এখন সেটা থমকে যাবে। পরিবেশের জন্য যা হবে ক্ষতিকর। কারণ ভ্যাট আরোপ করা হলে পণ্য উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে এবং বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ মূল্যস্ফিতির কারণে পাদুকা ব্যবসা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমেছে। এ অবস্থায় ভ্যাট বাড়লে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। এ খাতের বহু কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। কর্মচারীরা বেকার হবেন। পাশাপাশি দেশে একটি বড় অংশ ভাম্যমাণ বিক্রেতারা কর্ম হারাবেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল করিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান রহমান সাজু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান প্রমুখ।

এ সংবাদ সম্মেলনের আগে এ খাত সংশ্লিষ্ট শ্রমিক-কর্মচারীরা ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনে মানববন্ধন করেন। এরপর তারা সরকারের কাছে অতিসত্বর ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান। দাবি পূরণ না হলে আবারও শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট এবং চূড়ান্তভাবে কারখানা বন্ধের কর্মসূচি নেওয়া হবে বলে জানান তারা।

এনএইচ/কেএসআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।