বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বতন্ত্র উচ্চশিক্ষা কমিশন গঠনের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:২৬ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

বর্তমানে দেশের সরকারি বেসরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয় দেখভাল করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এ প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা বাড়াতে সম্প্রতি একটি খসড়া অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা হয়েছে। তাতে ইউজিসির নাম বদলে বাংলাদেশ উচ্চশিক্ষা কমিশন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

উচ্চশিক্ষা কমিশন অধ্যাদেশের নিয়ে আলোচনা সমালোচনার মধ্যেই এবার শুধু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরিচালনায় আলাদা স্বতন্ত্র উচ্চশিক্ষা কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকপক্ষ ও অংশীজনরা।

সম্প্রতি রাজধানীতে অনুষ্ঠিত জরুরি যৌথ বৈঠকে এ দাবি জানানো হয়৷ ৮৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক প্রতিনিধি এ বিষয়ে সম্মিলিত অবস্থান ও সুপারিশ উপস্থাপন করেন।

তাদের দাবিগুলো হলো- বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি স্বতন্ত্র উচ্চশিক্ষা কমিশন গঠন, নিয়ন্ত্রণ ও বৈষম্যমূলক নীতির পরিবর্তে বিশ্বব্যাপী প্রচলিত শিক্ষা বান্ধব নীতি অনুসরণ।

শিক্ষার্থী ঋণ ও গবেষণা সহায়তা কার্যক্রম চালু; শিল্প ও শিক্ষা খাতের মধ্যে কার্যকর সম্পর্ক জোরদার, ভ্যাট ও অপ্রয়োজনীয় কর পুনর্বিবেচনা এবং নির্দিষ্ট সময়সীমা ও স্বচ্ছ অনুমোদন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা।

বৈঠক সূত্র জানায়, মূলত ইউজিসি কর্তৃক প্রস্তাবিত ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ (সংশোধনী) খসড়া এবং চলমান প্রশাসনিক জটিলতা’ শীর্ষক এ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মালিক সমিতি।

সেখানে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের বেসরকারি উচ্চশিক্ষা খাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষক প্রতিনিধি এবং বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্যরা।

বৈঠকে অংশীজনরা উল্লেখ করেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শতভাগ টিউশন ফি প্রদান করে; তার ওপর ভ্যাট ও বিভিন্ন প্রকার কর বহন করে। কিন্তু কোনো সরকারি স্কলারশিপ, স্টুডেন্ট লোন বা গবেষণা সহায়তা পায় না।

তারা আরও জানান, আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের প্রোগ্রাম অনুমোদনে ইউজিসির দীর্ঘসূত্রতা, গবেষণা ও পিএইচডি কার্যক্রম অনুমোদনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের স্থবিরতার পাশাপাশি শিল্পখাতের সঙ্গে কার্যকর সংযোগ ও বৈশ্বিক কর্মবাজারে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছে। চলমান এ পরিস্থিতিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অন্যায্য ও বৈষম্যমূলক অবস্থা হিসেবে বৈঠকে উল্লেখ করা হয়।

বৈঠকে আরও বলা হয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কোনো সরকারি অনুদান, জমি বা আর্থিক সহায়তা ছাড়াই সম্পূর্ণ নিজস্ব উদ্যোগে পরিচালিত হলেও সরকারের নীতিগত অনিশ্চয়তা এবং ইউজিসির অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপের কারণে বর্তমানে চার লক্ষাধিক শিক্ষার্থী, হাজার হাজার শিক্ষক-গবেষক, অভিভাবক ও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা গভীর উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন।

এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় সহযোগিতা, বাস্তবসম্মত সমাধান, শিক্ষার্থী উন্নয়ন ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বান্ধব নীতিমালা করা না হলে আন্দোলন–সংঘাতের কারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খাত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ওই বৈঠকে দেশের মানবসম্পদ উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক মানের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি এবং অংশীজন শিক্ষানুরাগীদের সম্মিলিতভাবে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

এএএইচ/এমএএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।