প্রাথমিকে করোনা আক্রান্ত পাঁচশ’ ছুঁই ছুঁই

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:১৫ পিএম, ১০ জুলাই ২০২০

প্রাথমিক শিক্ষা পরিবারে ৪৯৪ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪০২ জন। আক্রান্ত ও মৃত্যুর শীর্ষে রয়েছে ঢাকা বিভাগ। এরপরই অবস্থান চট্টগ্রামের। এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। আর রাজশাহী বিভাগে এখনো কেউ সুস্থ হননি।

শুক্রবার (১০ জুলাই) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) ওয়েবসাইটে করোনা আপডেট থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। সেখানে আক্রান্ত সবার নাম, পদবি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ঠিকানা এবং বর্তমান অবস্থার বিবরণ দেয়া হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিভাগভিত্তিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪৯৪। আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকায় ১৬৪ জন, চট্টগ্রামে ১৩৮ জন, সিলেটে ৪৮ জন,বরিশালে ২৯ জন, রংপুরে ২৪ জন, ময়মনসিংহে ১১ জন, রাজশাহীতে ৪১ জন ও খুলনায় ৩৯ জন।

করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ৩৭৪ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ৬৪ জন, কর্মচারী ৩৪ জন ও শিক্ষার্থী ১৯ জন।

বিভাগভিত্তিক করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৮০ জন। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৪১, চট্টগ্রামে ১৯, খুলনায় ৬, বরিশালে ৩, সিলেটে ৫, রংপুরে ২, ময়মনসিংহে ৪ জন। তবে রাজশাহী বিভাগে এখনো পর্যন্ত কেউ সুস্থ হননি।

সুস্থদের তালিকায় রয়েছেন ৫৯ জন শিক্ষক, ১০ জন কর্মকর্তা, ৩ জন কর্মচারী ও ৮ জন শিক্ষার্থী।

কুমিল্লার চান্দিনার কাদুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মাসুম খান বলেন, ‘এখন আমি সুস্থ আছি তবে আমার বাবা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তিনিও অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। করোনায় আমার পরিবার থেকে কেউ বাইরে বের না হলেও আমাকে অফিসের কাজে যেতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ২ হাজার পাঁচশত টাকা যাচাই-বাছাইয়ের কাজ, এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ দেয়ার কাজও করেছি। তাই সন্দেহ করছি এ কাজে অংশ নিতে গিয়ে হয়তো করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলাম।’

লক্ষ্মীপুর সদরের মকরধ্বজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘এখন সুস্থ আছি। তবে মে মাসের ২৮ তারিখ করোনা আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলাম। ফলে এখন কোমর ব্যথায় ভুগছি।’

আলমদিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আমিনা বেগম বলেন, করোনার উপসর্গ দেখা দেয়ায় ৯ জুন নমুনা দিয়েছি কিন্তু এখনো রিপোর্ট আসেনি। স্কুল বন্ধ থাকলেও ৯ মে উপবৃত্তির কাজ করতে গিয়েছিলাম। পরিবারের আট জন সদস্যের মধ্যে পাঁচজনেরই করোনা ধরা পড়েছে।’

করোনা আক্রান্তদের সঙ্গে জেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসাররা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন বলেও জানা যায়।

তবে মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। ইতোমধ্যে ১২ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর করোনায় মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এ পর্যন্ত ১০ জন শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। একজন কর্মকর্তা ও একজন কর্মচারীর মৃত্যু হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এখনো কারো মৃত্যু হয়নি।

করোনায় মৃত চট্টগ্রামের উত্তর পাহাড়তলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ফরহানা শবনমও উপবৃত্তির কাজে গিয়েছিলেন বলে জানা যায়। তার ভাই দিদারুল আলম বলেন, ‘মাঝে মাঝে স্কুলের বিভিন্ন কাজ করতে হত বোনকে। স্কুলের কাজে ব্যাংকেও গিয়েছিলেন। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর মৃত্যুর দিন তার শুধুই জ্বর ছিল আর অন্য কোনো উপসর্গ ছিল না। তাই সুস্থ হচ্ছেন এরকম ভেবে নিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়ায় দ্রুত হাসপাতালের নিয়ে যাওয়ার পর জরুরি বিভাগের রুমেই মারা গেছেন।’

এমএইচএম/এমএফ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।