অগ্রিম ফি না দেয়ায় ক্লাস থেকে শিক্ষার্থী বহিষ্কার!
টিউশন ফি বাকি থাকায় এবং চলতি মাসের টিউশন ফি অগ্রিম না দেয়ায় রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকার হার্ডকো ইন্টারন্যাশনাল স্কুল তাদের প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থীকে অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়নি। রোববার (১৯ জুলাই) স্কুলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রিন্সিপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কর্তৃপক্ষের এমন আচরণের প্রতিবাদ জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
হার্ডকো প্যারেন্টস ফোরামের আহ্বায়ক কল্যাণ ওয়াদ্দার বলেন, করোনাকালীন স্কুল বন্ধ থাকায় টিউশন ফি অর্ধেক রাখার দাবি জানিয়ে আসছেন অভিভাবকরা। চাকরি চলে যাওয়া, বেতন কমে যাওয়া বা ব্যবসায় মন্দার কারণে অনেক অভিভাবকের আয় কমে গেছে। তাছাড়া স্কুল বন্ধ থাকায় স্কুল পরিচালন ব্যয়ও প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
গত সপ্তাহে হাইকোর্ট থেকে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে ফি বাকি পড়ার কারণে কোনো শিক্ষার্থীকে যেন অনলাইন ক্লাসে যোগদানে বিরত রাখা না হয়। উত্তরার দিল্লি পাবলিক স্কুলের একজন অভিভাবকের আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এই নির্দেশনা দেন। তবে হার্ডকো স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, হাইকোর্টের নির্দেশনা কেবল দিল্লি পাবলিক স্কুল মানতে বাধ্য, তারা নয়।
শিক্ষার্থীদের উদ্ধৃতি দিয়ে অভিভাবকরা জানিয়েছেন, স্কুল প্রশাসন থেকে শিক্ষকদের কাছে টিউশন ফি বাকি থাকা শিক্ষার্থীদের তালিকা ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে তাদের ক্লাসের সুযোগ না দিতে। তালিকায় থাকা কেউ অনলাইন ক্লাসে ঢুকে গেলে তাকে বের করে দেয়া হয়েছে, এমন ঘটনাও ঘটেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক জানান, তার সন্তান অষ্টম শ্রেণিতে উঠেছে। জুন পর্যন্ত তার টিউশন ফি দেয়া আছে। শুধু জুলাই মাসের বেতন বাকি। নিয়ম অনুযায়ী ১৫ তারিখের মধ্যে মাসের বেতন অগ্রিম দিয়ে দিতে হয়। নতুবা মাসের শেষ দিন পর্যন্ত ২০০ টাকা জরিমানা এবং পরের মাসে টিউশন ফি দিলে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এভাবে পরপর তিন মাস বেতন না দিলে স্কুলে অভিভাবকের ডাক পড়ে। কিন্তু ক্লাসে যোগদানে কখনও শিক্ষার্থীকে বাধা দেয়া হয় না। কিন্তু আজ তা করা হয়েছে। অগ্রিম টিউশন ফি না দেয়ায় অনলাইন ক্লাসে তার ছেলেকে যোগ দিতে দেয়া হয়নি। যা অন্যায়, অমানবিক ও বেআইনি।
নানা কারণে আরও অনেক অভিভাবক তার সন্তানের টিউশন ফি দিতে পারেননি। তাদের সবাইকে ক্লাসের বাইরে রেখেছে হার্ডকো স্কুল কর্তৃপক্ষ। অভিভাবকদের সাথে আলোচনায় হার্ডকো কর্তৃপক্ষ বলেছে, প্রায় ৭০ ভাগ শিক্ষার্থী জুলাই মাসের টিউশন ফি পরিশোধ করেছে। তাদেরই কেবল অনলাইন ক্লাসে যোগ দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। যদিও বিভিন্ন সেকশনের অনলাইন ক্লাসে আজ মাত্র ২৫ থেকে ৩৫ শতাংশ শিক্ষার্থী যোগ দিয়েছে।
এমএইচএম/বিএ/এমকেএইচ