নির্ধারিত দিনে টিকা না পেলে শিক্ষার্থীদের যা করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:০৬ পিএম, ০৬ নভেম্বর ২০২১
ফাইল ছবি

ঢাকা মহানগরের আটটি স্কুলে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গত সোমবার (১ নভেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়। পরদিন থেকে অন্য কেন্দ্রেও টিকাদান চলছে।

তবে প্রতিটি কেন্দ্রে দিনে ৫ হাজার করে মোট ৪০ হাজার টিকা দেওয়ার কথা থাকলেও স্কুলের ধারণক্ষমতার কারণে তার অর্ধেক টিকা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, নির্ধারিত দিনে কোনো শিক্ষার্থী টিকা নিতে না পারলে পরে আর দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক অভিভাবক। অনেকেই বুঝতে পারছেন না পরে কীভাবে টিকা পাওয়া যাবে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) শাহেদুল খবির চৌধুরী শনিবার (৬ নভেম্বর) জাগো নিউজকে বলেন, কোনোভাবে শিক্ষার্থী নির্ধারিত দিনে টিকা না পেলে স্কুলে তথ্য জানাতে হবে। কতজন টিকা পায়নি সেটি স্কুল কর্তৃপক্ষ ঢাকা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানালে সেটি আমাদের কাছে পাঠানো হবে। পরে টিকাবঞ্চিতদের নতুন করে তালিকা সেই কেন্দ্রে পাঠানো হবে। তারপর দ্রুত সময়ের মধ্যে আবারও তাদের কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য এসএমএস দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, চলতি সপ্তাহ থেকে কেন্দ্রের ধারণক্ষমতা অনুযায়ী টিকা দেওয়ার সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভেতরে ধারণক্ষমতা থাকলেও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবক আসায় কেন্দ্রের গেটের সামনে ভিড় তৈরি হয়। সেটি বিবেচনা করে সংখ্যা বাড়ানো হবে। পরিমাণ বাড়ালে যেন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেটিও গুরুত্ব দেওয়া হবে।

আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত এই টিকাদান কার্যক্রম চলবে জানিয়ে মাউশির পরিচালক বলেন, চলতি সপ্তাহের শুরু থেকে টিকার সংখ্যা বাড়ানোর কথা থাকলেও চলমান পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এটি বাস্তবায়ন করা হবে।

এদিকে, টিকাকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন রাজধানীর একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা। নাম প্রকাশ না করে এক প্রতিষ্ঠানের প্রধান বলেন, বর্তমানে ঢাকা শহরের শিক্ষার্থীদের টিকাদানের জন্য আটটি কেন্দ্রে কার্যক্রম চলমান। এতে এক এলাকার শিক্ষার্থীদের অন্য এলাকায় গিয়ে টিকা নিতে হচ্ছে। টিকা গ্রহণের আদেশ দেওয়া হচ্ছে মাত্র দু-একদিন আগে।

তিনি বলেন, এতে দেখা যাচ্ছে- মোহাম্মদপুর এলাকার শিক্ষার্থীদের টিকা নেওয়ার জন্য যেতে হচ্ছে বাড্ডার ভাটারা এলাকার স্কুলে। অথবা মোহাম্মদপুরের কোনো একটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের যেতে হবে মিরপুরের কোনো কেন্দ্রে। এমন উদাহরণ অনেক আছে। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। এছাড়া নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় কেন্দ্রগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানাও প্রায় অসম্ভব হচ্ছে। টিকাকেন্দ্রগুলোতেও অত্যধিক চাপ থাকছে।

আরেক প্রতিষ্ঠানের প্রধান বলেন, টিকাকেন্দ্র দূরে হওয়ায় অনেকে টিকা নিতে আগ্রহ হারাচ্ছে। কোনো কোনো অভিভাবক তাদের সন্তানকে ঝুঁকি নিয়ে দূরে যেতে দিচ্ছেন না। আবার কেন্দ্রে অনেক চাপ থাকায় টিকা গ্রহণের বিস্তারিত তথ্য পাচ্ছে না অনেকে। কেউ কেউ টিকাকেন্দ্রে গিয়েও লম্বা লাইন দেখে ফিরে আসছে বলেও জানা গেছে। এসব কারণেই শিক্ষার্থীদের জন্য ঢাকা মহানগরের টিকাকেন্দ্র বৃদ্ধি করার দাবি জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য রাজধানীর হার্ডকো ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, সাউথপয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চিটাগং গ্রামার স্কুল, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা কমার্স কলেজ, কাকলি হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, সাউথ ব্রিজ স্কুল, স্কলাসটিকা স্কুল কেন্দ্রে টিকা কার্যক্রম চলছে।

এমএইচএম/এমআরআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।