‘এখন পরীক্ষার গুরুত্ব নেই, দরকার ভালো পয়েন্ট’

আমরা প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়ার পর সিনিয়র ভাইদের পরীক্ষা দিতে দেখতাম। ফলাফল নিতে তারা সবাই দল বেঁধে কলেজে আসতেন। আমরাও দেখতে আসতাম। কিন্তু এবার আমরা কোনো রকম পরীক্ষা দিয়ে একটা ভালো ফলাফলের জন্য তাকিয়ে ছিলাম। ফলাফলের দিন তেমনভাবে কেউ কলেজেও আসেনি। এখন পরীক্ষায়ও তেমন গুরুত্ব নেই, দরকার শুধু ভালো পয়েন্ট।
রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সারাদেশে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের দিনে নটরডেম কলেজের জিপিএ-৫ পাওয়া পরীক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান জাগো নিউজকে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন।
করোনার কারণে কলেজ বন্ধ থাকায় এমনিতেও শিক্ষার্থীশূন্য দেশের অধিকাংশ কলেজ। এ কারণে ফলাফল ঘোষণার দিনেও দেশের শীর্ষে থাকা নটরডেম কলেজে শিক্ষার্থীদের তেমন একটা উপস্থিতি চোখে পড়েনি।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও যারা ফলাফল নিতে আসবে, তারা তো আর এখন ক্লাস করবে না। চলমান বর্ষের শিক্ষার্থীরা না এলেও, ফলাফল নিতে অন্যান্য সময় পরীক্ষার্থীরা আসতো। কিন্তু এখন পরীক্ষার প্রতি আগের মতো গুরুত্ব নেই। এখন শুধু একটা ভালো পয়েন্ট হলেই যথেষ্ট।
নটরডেরম কলেজের আরেক শিক্ষার্থী সাজিদ হোসেন রাফী৷ তিনিও জিপিএ-৫ পেয়েছেন। কলেজে এসে দু-চারজনের সঙ্গে সেলফি তুলছেন। এ পরীক্ষার্থী জাগো নিউজকে বলেন, করোনার সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস হয়নি। অনলাইন ক্লাসে কলেজের ফিলিংসটা পাওয়া যায় না। পরীক্ষাও হয়েছে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। এখন সবাই ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষার কোনো প্রভাব ভর্তি পরীক্ষায় পড়বে কি না, জানতে চাইলে এ শিক্ষার্থী বলেন, এইচএসসির সঙ্গে ভার্সিটি ভর্তি পরীক্ষার কোনো সম্পর্ক নেই। বাসায় বাংলা-ইংরেজিটা ভালো করে পড়লেই ভর্তি পরীক্ষা ভালো হবে।
নটরডেম কলেজের অধ্যক্ষ ফাদার হেমন্ত রোজারিও জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা তো পরীক্ষাকেন্দ্রিক হয়ে গেছে। পরীক্ষা হলেই শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করে, অন্যথায় না। যেসব বিষয়ে পরীক্ষা হয়েছে, শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র সে বিষয়গুলো নিয়েই পড়াশোনা করেছে। বাকি বিষয়গুলো সিলেবাসে না থাকায় ইচ্ছাকৃতভাবে তারা সেসব বিষয়ে পড়াশোনা করেনি। এর প্রভাব ভবিষ্যতে পড়বে। সব বিষয়ে পরীক্ষা না হওয়ার কারণে তাদের জ্ঞানের ঘাটতি থেকে যাবে।
এমআইএস/এমকেআর/জিকেএস