নিবন্ধন-একাডেমিক স্বীকৃতি ছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় চলবে না

নিবন্ধন ও একাডেমিক স্বীকৃতি ছাড়া কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় চলবে না। এক সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করা হবে। এখন যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে সেগুলোকেও নিবন্ধন নিতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ। এসময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন>> সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্ট বিল পাস
বর্তমানে যে স্কুলগুলো আছে তার মাত্র ১০ শতাংশ নিবন্ধিত। বাকি ৯০ শতাংশ অনিবন্ধিত। অনিবন্ধিত এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধন নেওয়ার জন্য তিন মাস সময় দেওয়া হবে।
সচিব বলেন, বেসরকারি পর্যায়ে প্রায় ৪০ হাজারের বেশি স্কুল ছিল। ২০১১ সালে আমাদের বিধিমালা থাকা সত্ত্বেও আমরা কখনো বলি না সরকার নিয়ন্ত্রণ করবে, সরকারের তত্ত্বাবধান থাকতে হবে। এটির ঘাটতি ছিল। নিবন্ধন ছাড়া এবং একাডেমিক স্বীকৃতি ছাড়া ৯০ শতাংশ স্কুল এখনো চলমান আছে।
তিনি বলেন, নিবন্ধন ছাড়া এবং একাডেমিক স্বীকৃতি ছাড়া কোনো বেসরকারি পর্যায়ের প্রাথমিক বিদ্যালয় চলবে না। ইংলিশ মিডিয়াম ছাড়া কিন্ডার গার্টেন, নার্সারি স্কুল এবং হাইস্কুলের সঙ্গে প্রাইমারিসহ সব বেসরকারি স্কুল নিবন্ধন ছাড়া একাডেমিক স্বীকৃতি ছাড়া চলবে না।
এ সংক্রান্ত বিধিমালার গেজেট এক সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এটির ওপর আমরা ৩-৪ মাস প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে কাজ করেছি। আইন মন্ত্রণালয়ে ছিল, গত পরশু এটা আইন মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত ভেটিং করে চলে এসেছে। এটি এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা জারি করে দেবো।
তিনি আরও বলেন, এসআরও নম্বরের জন্য আমরা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এসআরও নম্বর পেলেই গেজেট প্রকাশ করা হবে।
সচিব বলেন, এটা জারি করে দিলে আমাদের প্রাথমিক পর্যায়ে বেসরকারি যে স্কুলগুলো আছে কিন্ডার গার্টের, নার্সারি স্কুল, ইংলিশ ভার্সন অথবা হাইস্কুলের সঙ্গে যে প্রাইমারি বা আলাদা প্রাইমারি এগুলো একটা নির্দিষ্ট নিয়ম-নীতির আওতায় আসবে।
নিবন্ধন কে দেবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে সচিব বলেন, একাডেমিক স্বীকৃতির জন্য আমাদের ২০১১ সালের যে বিধিমালা ছিল সচিব পর্যন্ত আসতে হতো। আমরা এটাকে পাওয়ার ডেলিগেট করে দিয়েছি, খুবই সহজ করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা আবেদন দাখিলের চেকলিস্ট করে দিয়েছি। চেকলিস্টের ভিত্তিতে উপজেলা শিক্ষা অফিসার একাডেমিক স্বীকৃতির জন্য তদন্ত করে রিপোর্ট দেবে। ওনার জন্য সর্বোচ্চ সময় ৩০ দিন। আবেদন করার ৩০ দিনের মধ্যে আবশ্যিকভাবে উনি তদন্ত করে চেকলিস্ট অনুযায়ী পাঠাবে এবং জেলা প্রাথমিক অফিসার পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবে।
আরও পড়ুন>> বাংলা-বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের মাধ্যমে মিলবে আর্থিক সহায়তা
আর নিবন্ধনের জন্য একই প্রক্রিয়া। উপজেলা শিক্ষা অফিসার তদন্ত করে রিপোর্ট দেবে এবং ডিপিওর মাধ্যমে আমাদের ডিভিশনাল যে ডিডি আছেন উনি নিবন্ধন দেবেন। এটার জন্য মন্ত্রণালয়ে তো আসতেই হবে না, অধিদপ্তরেও আসতে হবে না।
এখন সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে তাদের কি নিবন্ধন নিতে হবে? সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্ন করা হলে সচিব বলেন, হ্যাঁ তাদের নিবন্ধন নিতে হবে। সবাইকে নিবন্ধন নিতে হবে। প্রাথমিকভাবে একাডেমিক স্বীকৃতি আমরা ৩ বছরের জন্য দেবো। নিবন্ধন এক বছরের জন্য দেবো। যদি তাদের কিছু ক্রাইটেরিয়া ফুলফিল করা বাকি থাকে, সেগুলোর জন্য আমরা একটা সময় দেবো। এর সধ্যে যদি নিবন্ধন বা একেডেমিক স্বীকৃতি কন্টিনিউ করবে, অন্যথায় সরকার এটা বাতিল করবে।
অনিবন্ধিত স্কুল কতটি আছে এবং বর্তমানে যেসব স্কুল আছে তাদের কতদিনের মধ্যে নিবন্ধন নিতে হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, বিধিমালা জারির পর তিন মাসের মতো সময় দেওয়া হবে। আমাদের ৪৭ হাজারের কাছাকাছি যে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে, এর মধ্যে ৯০ শতাংশ নিবন্ধন বহির্ভূত। মাত্র ১০ শতাংশ নিবন্ধিত। আমরা চাইবো আগামী অর্থবছর ১ জানুয়ারি ২০২৪ থেকে নিবন্ধনবিহীন ও একাডেমিক স্বীকৃতি ছাড়া কোনো প্রাইমারি স্কুল যেন না চলে।
এমএএস/ইএ/জিকেএস