করোনাকালে শিখন ঘাটতিতে ফেল ২৮.৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী
মহামারি করোনাভাইরাসে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ায় ব্যাপক ঘাটতি হয়েছে। এ শিখন ঘাটতির কারণে অষ্টম শ্রেণির ২৮ দশমিক ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী পাসই করতে পারেনি। অর্থাৎ তারা ৩৩ শতাংশ নম্বরও পায়নি। আর নবম শ্রেণিতে ফেলের হার ২৬ দশমিক ২ শতাংশ।
এডুকেশন ওয়াচের পক্ষ থেকে তিনটি বিষয়ের ওপর নেওয়া পরীক্ষার ফলাফলে এমন পাওয়া গেছে। বাংলা, ইংরেজি ও গণিতের ওপর ৯০ মিনিটের পরীক্ষা নেয় সংস্থাটি। শিক্ষকরা এ পরীক্ষা মূল্যায়ন করেছেন। দৈবচয়ন পদ্ধতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থী বাছাই করে তাদের এ পরীক্ষা নেওয়া হয়।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের মিডিয়া বাজার হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়৷ ‘মহামারি-উত্তর শিক্ষা: স্কুল শিক্ষার পুনরুদ্ধার ও আগামীর অভিযাত্রা’ শীর্ষক প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
সংবাদ সম্মেলেনে গবেষণা প্রতিবেদনের সার্বিক দিক তুলে ধরেন এডুকেশন ওয়াচের ফোকাল পয়েন্ট ড. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি জানান, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ গবেষণার সার্বিক কাজ করা হয়। একই বছরের অক্টোবরে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হয়।
প্রতিবেদনের মাধ্যমিক পর্যায়ে শিখন মূল্যায়ন অংশে অষ্টম ও নবম শ্রেণির এমন ফলাফলের তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে জানানো হয়, শুধু ফেল নয়, পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ফল বলে বিবেচিত ডি গ্রেড (৩৩ থেকে ৩৯ শতাংশ নম্বর) পেয়েছে অষ্টম শ্রেণি ৩৬.১ শতাংশ শিক্ষার্থী। নবম শ্রেণিতে ডি গ্রেড পেয়েছে ৩৩.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী।
অন্যদিকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক ফলাফলে দেখা গেছে অষ্টম শ্রেণিতে বাংলায় ৮২ শতাংশ শিক্ষার্থী, ৬৫ শতাংশ ইংরেজিতে এবং গণিতে ৬৬ শতাংশ শিক্ষার্থী ৩৩ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাস করেছে।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ফলাফল অষ্টম শ্রেণির তুলনায় সামান্য ভালো। নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলায় ৮৪ শতাংশ, ইংরেজিতে ৭২ শতাংশ এবং গণিতে ৬৫ শতাংশ পাস করেছে।
মূল্যায়নে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা তুলনামূলকভাবে ভালো ফলাফল করেছে। উদাহরণস্বরূপ-মূল্যায়নে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭৪ শতাংশ মেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে, আর ছেলেদের মধ্যে এ হার ৬৮ শতাংশ। নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭৫ শতাংশ মেয়ে ও ছেলেদের ৭৩ শতাংশ উত্তীর্ণ হয়েছে।
এদিকে উভয় শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক ফলাফলে দেখা গেছে, যশোর জেলায় সর্বোচ্চ ৯০.৫ শতাংশ উত্তীর্ণ হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ফলাফল সবচেয়ে পিছিয়ে হবিগঞ্জ। এ জেলায় মোট পাসের হার ৪২.৯ শতাংশ।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এডুকেশন ওয়াচের চেয়ারপারসন কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ, গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক গবেষক সৈয়দ শাহাদৎ হোসেন, এডুকেশন ওয়াচের সদস্য অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ।
এএএইচ/এমআইএইচএস/জেআইএম