আম্মার বখতিয়ারের কি শাস্তি হবে

বিনোদন ডেস্ক
বিনোদন ডেস্ক বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৪২ পিএম, ২০ এপ্রিল ২০২৫
নামির খান। ছবি: সংগৃহীত

আম্মার বখতিয়ার একজন খুনি, ধর্ষক। কিন্তু এখনও তার শাস্তি হয়নি। হবে কি না বলাও যাচ্ছে না। অথচ আজ শেষ হয়ে যাচ্ছে ধারাবাহিক ‘কার্জ-ই-জান’। না কি কোনো টুইস্ট অপেক্ষা করছে!

২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বর হাম টিভিতে সম্প্রচার শুরু হয় পাকিস্তানি ধারাবাহিক ‘কার্জ-ই-জান’। ব্যস, সেটি আটকে ফেলে দর্শকদের। মূলত নাশওয়া চরিত্রটি ও তার জীবনের সঙ্গে দর্শক নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছিলেন। হাম টিভি ও ইউটিউবে বহু বাংলাদেশি দর্শক গভীর মনোযোগ দিয়ে তাদের কাহিনিতে চোখ রেখেছিলেন। আজ সেটার শেষ পরিণতির অপেক্ষা।

আম্মার বখতিয়ারের কি শাস্তি হবেইয়ুমনা জায়েদি। ছবি: সংগৃহীত

‘কার্জ-ই-জান’-এর প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইয়ুমনা জায়েদি (নাশওয়া বেহজাদ), উসামা খান (ব্যরিস্টার বুরহান আসিম), নামির খান (আম্মার বখতিয়ার)। এ ছাড়া উল্লেখযোগ্য কিছু চরিত্রে অভিনয় করেছেন তাজিন হুসেন (বিসমা আসিম), দীপক পারওয়ানি (বখতিয়ার), সাকিনা সামো (বরকত), ফজর শেখ (বিনিশ আসাদ) প্রমুখ। রাবিয়া রাজ্জাকের চিত্রনাট্যে ধারাবাহিকটি পরিচালনা করেছেন সাকিব খান।

নাশওয়া বেহজাদ একজন মেধাবী, আত্মমর্যাদাশীল এবং ন্যায়পরায়ণ তরুণী। তার জীবন অপ্রত্যাশিত বিপর্যয় ও দ্বন্দ্বে জর্জরিত। পেশায় সে একজন আইনজীবী, তবে তার সংগ্রাম শুধু আদালতে সীমাবদ্ধ নয়। প্রতিনিয়ত পারিবারিক নানান কিছুর সঙ্গে লড়তে হচ্ছে তাকে। নাশওয়ার জীবনের মোড় ঘুরে যায় যখন পরিবার তাকে চাচাতো ভাই আম্মার বখতিয়ারের সঙ্গে বিয়ে দেয়। স্বাধীনতাপ্রবণ নাশওয়ার জীবনে এই ঘটনা একটি ঝড় হয়ে আসে। তবু সে লড়াই চালিয়ে যায়। কখনো নীরবে সহ্য করে, কখনো প্রতিবাদ করে। নাটক জুড়ে দেখা যায়, কীভাবে সে একদিকে ব্যক্তিগত আবেগ, অন্যদিকে সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং ন্যায়বিচারকে একসূত্রে গাঁথে।

নাশওয়ার জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হয়ে ওঠে ব্যারিস্টার বুরহান আসিম। পেশাগত ও আবেগাত্মক সঙ্গী হয়ে ওঠে সে। তবে এই সম্পর্কও নাশওয়ার পথকে সহজ করতে পারে না। বরং প্রেম, আত্মত্যাগ এবং সংযমের এক জটিল পরীক্ষায় পড়ে যায় সে।

আম্মার বখতিয়ারের কি শাস্তি হবে

আম্মার বখতিয়ার নাশওয়ার চাচাতো ভাই এবং পরে স্বামী, একজন আত্মকেন্দ্রিক, সহিংস ও বিকৃত মানসিকতার মানুষ। আম্মার তার বোন বিনিশের স্বামী আসাদকে হত্যা করে। সেই ভয়ানক হত্যাকাণ্ডটি সে নিজের বোন বিনিশকে ভিডিও কলে দেখায়। ঘটনাটি ধারাবাহিকের অন্যতম শকিং পয়েন্ট, যা আম্মারের প্রকৃত চরিত্র দর্শকের সামনে তুলে ধরে। এই চরিত্রটি বাস্তবিক! চিত্রনাট্যকার রাবিয়া রাজ্জাকের নিজ পরিবারের একজন সদস্যকে তিনি এই গল্পে তুলে ধরেছেন। লেখিকা নিজেই এক সাক্ষাৎকারে সে কথা বলেছেন।

নাশওয়ার মা বিসমা একদিকে মেয়ের কল্যাণ চান, অন্যদিকে সামাজিক ও পারিবারিক চাপে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে থাকেন। আম্মারের বাবা বখতিয়ার পরিবারের প্রধান। তিনি আধিপত্যবাদী, রক্ষণশীল এবং সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ায় বিশ্বাসী। তার চোখে পারিবারিক সম্মান ও কর্তৃত্বই সবকিছু।

নাটকের আরেক চরিত্র বরকত, এক চতুর ও স্বার্থপর ব্যক্তি। নাশওয়ার দাদি এবং বখতিয়ারের মাকে দেখা যায় একজন চতুর, কৌশলী এবং স্বার্থপর নারী হিসেবে, যিনি পরিবারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য নানান রকম ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকেন।

আম্মার বখতিয়ারের কি শাস্তি হবে

‘কার্জ-ই-জান’-এর মূল আকর্ষণ কেবল প্রেম নয়, বরং ন্যায়-অন্যায়ের দ্বন্দ্ব, নারীর ক্ষমতায়ন এবং পারিবারিক জটিলতার নিখুঁত উপস্থাপন। নাটকের প্রতিটি সংলাপ, দৃশ্য এবং আবহসংগীত দর্শকের মনে স্থায়ী প্রভাব ফেলেছে। কুররাতুল আইন বালুচের গাওয়া ‘গিলা হ্যায় কিয়া তেরা’ গানটি এরই মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সামাজিক বাস্তবতা আর মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বে ভরপুর এই নাটক নিঃসন্দেহে পাকিস্তানি টেলিভিশনের ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হয়ে থাকবে।

লিখেছেন: তানজিহি তিশরাত

টিএটি/আরএমডি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।