হাবিব জানান দিলেন তিনি এখনো ফুরিয়ে যাননি

বিনোদন প্রতিবেদক
বিনোদন প্রতিবেদক বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:৪২ এএম, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
হাবিব ওয়াহিদ। ছবি: সংগৃহীত

হাবিব ওয়াহিদ খুব অল্প সময়ের মধ্যেই দেশের সংগীত পরিচালক ও শিল্পী হিসেবে গানের ভুবনে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেন। আজ (১৫ অক্টোবর) তার জন্মদিন। তিনি লোকসংগীতের রিমিক্স অ্যালবাম ‘কৃষ্ণ’ প্রকাশ করেছিলেন ২০০৩ সালে। এটি শ্রোতাদের মধ্যে সাড়া ফেলেছিল। এরপর একের পর অ্যালবাম ও সিনেমার গান গেয়ে তিনি জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছান।

তবে সেই জনপ্রিয়তার ধারাবাহিকতায় কোথায় যেন তাল কেটেছিল। দীর্ঘদিন ধরে হাবিবের কোনো গান শ্রোতাদের মাঝে আলোড়ন তৈরি করতে পারেনি। এ নিয়ে হাবিবের অনুরাগীদের মধ্যে কিছু হতাশা তৈরি হয়েছিল। অনেকেই মনে করেন, ‘হাবিব বুঝি গানের ভুবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছেন।’

তবে হাবিব সম্প্রতি জানান দিলেন, তিনি হারিয়ে যাননি। এখনো তিনি চাইলে যে কোনো সময় আপন আলোয় জ্বলে উঠতে পারেন। এর প্রমাণ তিনি রেখেছেন সম্প্রতি কোক স্টুডিও বাংলায় প্রকাশিত ‘মহাজাদু’ শিরোনামের গান দিয়ে। এ গান দিয়ে আবারও শ্রোতাদের মাত করেন। তার অনুরাগীরা ফিরে পেলেন সেই পুরোনো হাবিবকে। ইউটিউবে গানটির মন্তব্যের ঘরে চোখ রাখলেই সেটা বোঝা যায়। শ্রোতারা নস্টালজিয়ায় ভেসে যাচ্ছেন হাবিবের আগের সেই হিট গানগুলোর সময়ের স্মৃতি রোমন্থন করে।

হাবিব জানান দিলেন তিনি এখনো ফুরিয়ে যাননি

লোকগানকে আধুনিক রিমিক্সে নতুনভাবে তুলে ধরার ক্ষেত্রে হাবিব ওয়াহিদের জুড়ি নেই। এবারও তিনি সেই ‘মহাজাদু’ই দেখালেন কোক স্টুডিও বাংলার মঞ্চে। গানটি প্রকাশের পরপরই ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এখন পর্যন্ত গানটি দেখেছেন ১ কোটি ৬৬ লাখেরও বেশি দর্শক।

অনেকেই নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গানটি শেয়ার করে লিখছেন প্রশংসার কথা। হাবিব ভক্তরা ভেসেছেন উচ্ছ্বাসে। গানটিতে হাবিবের আরও একটি চমক ছিল তাজিকিস্তানের শিল্পী মেহরনিগরি রুস্তম। তিনি হাবিবের সঙ্গে দ্বৈত কণ্ঠে গেয়েছেন।

‘মহাজাদু’ গানটির গীতিকার কবি খোয়াজ মিয়া, যিনি লোককবি দুর্বিন শাহর শিষ্য ছিলেন। বাংলা গানের ইতিহাসে হাবিব ওয়াহিদের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নতুন প্রজন্মের কাছে তিনি যেমন প্রিয়, তেমনি পুরোনো শ্রোতারাও তার গান শুনে আবেগাপ্লুত হন। তাই ‘মহাজাদু’ প্রকাশের পর মনে হচ্ছে বাংলা গানের মঞ্চে আবারও এক রাজকীয় প্রত্যাবর্তন ঘটালেন হাবিব।

হাবিব তার একক সংগীতায়োজনে প্রথম অ্যালবাম ‘কৃষ্ণ’ লন্ডনে ছাত্রাবস্থায় প্রকাশ করেন। সেই অ্যালবামের বিষয়বস্তু ও সুর অনেক আগেই তৈরি করেছিলেন হাবিব। শুধু একজন গায়কের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। অ্যালবামের গানগুলো গেয়েছিলেন কায়া। অ্যালবামটির গানগুলো লন্ডনে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের মাঝে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের শ্রোতাদের কাছেও অ্যালবামটি জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।

হাবিব জানান দিলেন তিনি এখনো ফুরিয়ে যাননি

এরপর থেকে হাবিব আরও দুটি অ্যালবাম প্রকাশ করেন। এর নাম ‘মায়া’ ও ‘ময়না গো’। দুটিই বিক্রির তালিকায় একনম্বর ছিল। হাবিব এই অ্যালবামগুলোতে নতুন কণ্ঠের সংযোজন ঘটান। ‘কায়া’র পাশাপাশি এতে হেলালকে স্থান দেন। যার কণ্ঠে অনেক জাদু ছিল। জুলি, কনিকা, নির্ঝরের মতো নতুন মুখ ‘ময়না গো’ অ্যালবামে হাবিবের সাথে কাজ করেন। হাবিব নিজেও ময়না গো অ্যালবামের মাধ্যমে গায়ক হিসেবে নিজেকে আত্মপ্রকাশ করেন।

গানের পাশাপাশি হাবিব বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলেও অঘোষিত সম্রাট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তার বেশ কিছু চলচ্চিত্রের গানও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। যার শুরুটা তিনি করেছিলেন ‘হৃদয়ের কথা’ ছবিতে। সেই ছবিতে তার গাওয়া ‘ভালোবাসবো বাসবো রে বন্ধু তোমায় যতনে’ গানটি পৌঁছে গিয়েছিল সারা বাংলার আনাচে কানাচে।

আরও পড়ুন:
‘মহা জাদু’ দিয়ে হাবিবের রাজকীয় ফিরে আসা, নস্টালজিক শ্রোতারা
তৃতীয় বিয়ে করলেন হাবিব ওয়াহিদ

হাবিবের আরেক পরিচয় তিনি প্রখ্যাত ফোক শিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদের ছেলে। তবে বাবার খ্যাতি আর সুনামকে তিনি জয় করেন আপন আলোয়। ব্যক্তি জীবনে বিবাহিত হাবিব নিজেও এক পুত্রের জনক।

এমএমএফ/এলআইএ/এমএফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।