জেমসের কনসার্টে ভয়াবহ হামলার বর্ণনা দিলেন উপস্থাপক

বিনোদন প্রতিবেদক
বিনোদন প্রতিবেদক বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৩৯ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
জেমসের কনসার্টে ভয়াবহ হামলার বর্ণনা দিলেন উপস্থাপক

ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বছর পূর্তি ও পুনর্মিলনী হওয়ার কথা ছিল স্মরণীয় এক আনন্দোৎসব। হাজারও প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীর উচ্ছ্বাস, নগর বাউল জেমসের আগমন; সব মিলিয়ে স্কুল প্রাঙ্গণ যেন পরিণত হয়েছিল উৎসবের রঙিন মঞ্চে। কিন্তু গান শুরুর আগমুহূর্তেই সেই আনন্দ বদলে যায় আতঙ্ক আর বিশৃঙ্খলায়।

ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিলেন অনুষ্ঠানের উপস্থাপক শ্রাবণ্য তৌহিদা। সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি তুলে ধরেছেন সেদিনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা।

শ্রাবণ্য জানান, অনুষ্ঠান তখন বেশ সুন্দরভাবেই এগুচ্ছিলো। জেমস মঞ্চে ওঠার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি নিজে মঞ্চে দাঁড়িয়ে র‍্যাফেল ড্র পরিচালনা করছিলেন। ঠিক তখনই হঠাৎ আকাশ থেকে বৃষ্টির মতো ইট-পাথর পড়তে শুরু করে।

আরও পড়ুন
তৌহিদি জনতা নয়, জেমসের কনসার্টে হামলার আসল সত্য জানালেন শিক্ষার্থী
জেমসের কনসার্টে হামলা, পাঁচজন নিহতের গুজব

তিনি লেখেন, ‘হঠাৎ একটি বড় পাথর ঠিক আমার সামনেই এসে পড়ল। মুহূর্তের মধ্যে সবকিছু বদলে গেল। মানুষের চোখেমুখে তখন শুধুই ভয়।’

প্রায় ১৫ হাজার মানুষের ভিড় সামলাতে আয়োজকদের তখন হিমশিম খেতে হয়। ইটের আঘাতে অনুষ্ঠানস্থলেই অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থীসহ বহু মানুষ আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় প্রায় তিন ঘণ্টা অনিশ্চয়তার পর নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে অনুষ্ঠান বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় আয়োজক কমিটি।

আয়োজক কমিটির সূত্র জানায়, এই অনুষ্ঠানটি শুধুমাত্র নিবন্ধিত প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত ছিল। তবে জেমসের কনসার্টের খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্কুলের বাইরে ভিড় জমান অসংখ্য অনিবন্ধিত দর্শক। ভেতরে ঢুকতে না পেরে তারা স্কুলের আশপাশে অবস্থান নেন এবং একপর্যায়ে দেয়াল টপকে ঢোকার চেষ্টা করেন।

বাধা দিলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের দিক থেকে স্কুল প্রাঙ্গণ ও মঞ্চ লক্ষ্য করে শুরু হয় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ। এতে আয়োজক কমিটির আহ্বায়কসহ অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জন আহত হন।

ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে পাঁচজন নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে তা দ্রুত নাকচ করে দেয় জেলা পুলিশ ও আয়োজক কমিটি। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, ইটের আঘাতে অনেকে আহত হলেও নিহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আহতদের মধ্যে ১০ থেকে ১২ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কড়া নিরাপত্তায় দ্রুত অনুষ্ঠানস্থল ছাড়েন জেমস। তার সঙ্গে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা শিল্পীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন।

শ্রাবণ্য তৌহিদা আক্ষেপ করে বলেন, শিল্পী হিসেবে তিনি ও জেমস দুজনই পারিশ্রমিক পেয়েছেন। কিন্তু হাজারও মানুষের স্বপ্নভঙ্গ আর যে মানসিক আঘাত তৈরি হয়েছে তা কোনো অর্থ দিয়ে পূরণ করা সম্ভব নয়।


এলআইএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।