বিএমইউ উপাচার্য
চিকিৎসা নিতে এসে রোগী ইনফেকশনে আক্রান্ত হবে এটা কাম্য নয়
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা ইনফেকশনে আক্রান্ত হবে এটা কাম্য নয়। ইনফেকশন প্রতিরোধে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্ট, টেকনিশিয়ান, ক্লিনারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
সোমবার (৩০ জুন) বিএমইউয়ে ‘নোসোকোমিয়াল ইনফেকশনস এর বর্তমান প্রবণতা ও প্রতিরোধ কৌশল’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
নোসোকোমিয়াল ইনফেকশনস হলো এমন সংক্রমণ যা রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর, এমনকি ছাড়পত্র পাওয়ার পরও হতে পারে এবং এটা রোগীর মূল অসুস্থতার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
সেমিনারে বিএমইউ উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনফেকশনস কন্ট্রোলের জন্য একটি শক্তিশালী কমিটি করা হয়েছে। ২০২৫-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে এজন্য আলাদা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা ইনফেকশনে আক্রান্ত হবে এটা কাম্য নয়। তাই ইনফেকশন প্রতিরোধে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্ট, টেকনিশিয়ান, ক্লিনারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, বিএমইউয়ের বর্তমান প্রশাসন ইনফেকশন প্রতিরোধে যে কোনো প্রকল্প ও গবেষণাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। এই সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানসহ জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম নিশ্চিত করবে। ইনফেকশন প্রতিরোধের বিষয়টি কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না।
এ সময় অ্যানেসথেশিয়া, এনালজেশিয়া অ্যান্ড ইনটেসিভ কেয়ার মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মন্তোষ কুমার মন্ডল বলেন, নোসোকোমিয়াল ইনফেকশনস থেকে রক্ষা পেতে অ্যান্টিবায়োটিকের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার রোগীর শরীরকে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স করে তোলে, ফলে অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করে না, যা রোগীর আরোগ্য লাভে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। তাই এই বিষয়ে এখনই সর্বোচ্চ মাত্রায় সবাইকে সতর্ক হতে হবে।
সেমিনারে মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড ইমিউনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহেদা আনোয়ার স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন প্রতিরোধমূলক দিক বর্ণনা করেন। তিনি সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং নীতির কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, বিশেষ করে নবগঠিত আইপিসি টিমের আইপিসি নীতি প্রণয়ন এবং পদ্ধতির উন্নয়নের ওপর আলোকপাত করেন। তিনি হ্যান্ড হাইজিন এবং পিপিইর সহজ সরবরাহ, ইনস্টিটিউটের সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, স্টেরিলাইজেশন পদ্ধতি, এনভায়রনমেন্টাল সার্ভেইলেন্স এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল স্টুয়ার্ডশিপ প্রোগ্রামের ওপর আলোচনা করেন।
হাসপাতালে কর্মরত স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের ক্রমাগত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং তাদের টিকাদানের ব্যবস্থা জোরদার করার পরামর্শ দেন ডা. শাহেদা আনোয়ার। তিনি বলেন, একটি প্রতিষ্ঠানে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ (আইপিসি) অনুশীলন বাস্তবায়নে বেশকিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে কিন্তু কার্যকর আইপিসি কমিটি, নীতি নির্ধারণ ও দক্ষতার সঙ্গে এই বাধাগুলো অতিক্রম করা সম্ভব। তিনি এর কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য আইপিসি সম্পর্কে অধিকতর গবেষণার ওপর জোর দেন।
সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বিএমইউয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. শামীম আহমেদ, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম, সেমিনার কমিটির চেয়ারপারসন অধ্যাপক ডা. আফজালুন নেছা ও ইন্টারন্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. খালেদ মাহবুব মোর্শেদ (মামুন) বক্তব্য রাখেন।
এসইউজে/ইএ/জেআইএম