সরকারের হাতে এখনো মজুত ৯ কোটি ডোজ টিকা

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১২:৪২ পিএম, ২৬ জানুয়ারি ২০২২
ফাইল ছবি

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অব্যাহতভাবে বাড়ছে। তবে সরকার করোনা প্রতিষেধক টিকাদান কার্যক্রম সফলতার সঙ্গে পরিচালনা করায় হাসপাতালগুলোতে অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যক করোনা রোগী ভর্তি হচ্ছেন। মহামারি কবলিত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টিকার ঘাটতি থাকলেও বাংলাদেশে তা নেই। সরকারের হাতে এখনো টিকার ৯ কোটি ডোজেরও বেশি মজুত রয়েছে।

করোনার তৃতীয় ঢেউ চলাকালীন দেশের বেসরকারি হাসপাতালগুলোর প্রস্তুতি সম্পর্কে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) আয়োজিত এক সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সরকারিভাবে এরইমধ্যে সারাদেশে ৩১ কোটি টিকা কেনার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ২৫ কোটি ডোজ টিকা পাওয়া গেছে। ২৫ জানুয়ারি পর্যান্ত সর্বমোট ১৫ কোটি ৬৪ লাখ ১৬ হাজার ৬০৪ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলার সময় চিকিৎসাক্ষেত্রে অনেক কিছুর ঘাটতি ছিল। হাসপাতালগুলোতে করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক ডেডিকেটেড সাধারণ ও আইসিইউ শয্যা, সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন এবং অক্সিজেন সিলিন্ডারের সুব্যবস্থা ছিল না। করোনা প্রতিরোধে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হলেও টিকার স্বল্পতায় এ কর্মসূচিও শ্লথগতিতে চলছিল। ডাক্তার, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যেও করোনা চিকিৎসা নিয়ে অভিজ্ঞতার ঘাটতি ছিল। এছাড়া করোনা সম্পর্কে সাধারণ মানুষেরও ভাল ধারণা ছিল না।

তিনি বলেন, দ্বিতীয় ঢেউ সফলভাবে মোকাবিলার পর নিজেদের মধ্যে বিশ্বাস ও আস্থা জন্মেছে। বর্তমানে করোনার তৃতীয় ঢেউ চলছে। এ ঢেউ মোকাবিলায় সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলো সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।

জনগনকে নিবন্ধন করে টিকা নেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান ডা. জাহিদ মালেক।

দেশে ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। শুরুর দিকে শুধুমাত্র ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া হতো। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে ফাইজার, মর্ডানা, সিনোফার্ম এবং সিনোভ্যাকের টিকা দেওয়া হয়।

২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে ১৫ কোটি ৬৪ লাখ ১৬ হাজার ৬০৪ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ডোজের ৯ কোটি ৫৪ লাখ ৪০ হাজার ৩২১ জন, দ্বিতীয় ডোজের ৫ কোটি ৯৭ লাখ ১১ হাজার ৫৩৮ জন এবং বুস্টার ডোজ নিয়েছেন ১২ লাখ ৬৪ হাজার ৭৪৫ জন।

দেশে কোন টিকা কত ডোজ দেওয়া হলো:
এ পর্যন্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েছেন ২ কোটি ৮৩ লাখ ২৩ হাজার ৮৫৮ জন। এর মধ্যে ১ কোটি ৮৮ লাখ ৩ হাজার ৪১৬ জন প্রথম ডোজ, ৮৯ লাখ ৪৪ হাজার ৯৫৬ জন দ্বিতীয় ডোজ এবং ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৪৮৬ জনকে বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে।

ফাইজারের টিকা নিয়েছেন ২ কোটি ৯ লাখ ৪ হাজার ২৭৭ জন। এর মধ্যে ১ কোটি ৬৮ লাখ ৭০ হাজার ৪৩৩ জন প্রথম ডোজ, ৩৭ লাখ ২৪ হাজার ৬২ জন দ্বিতীয় ডোজের এবং ৩ লাখ ৯ হাজার ৭৮২ জনকে বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে।

সিনোফার্মের টিকা নিয়েছেন ৫ কোটি ৫০ লাখ ২৫ হাজার ৭৭২ জন। এর মধ্যে ৫ কোটি ৯ লাখ ৯১ হাজার ৯২৮ জন প্রথম ডোজ, ৩৭ লাখ ২৪ হাজার ৬২ জন দ্বিতীয় ডোজ এবং ৩ লাখ ৯ হাজার ৭৮২ জনকে বুস্টার ডোজের টিকা দেওয়া হয়।

মর্ডানার টিকা নিয়েছেন ৬০ লাখ ৫৪ হাজার ৬১ জন। এর মধ্যে ৩০ লাখ ৯ হাজার ৩৭ জন প্রথম ডোজ, ২৬ লাখ ৬৪ হাজার ৮৫০ জন দ্বিতীয় ডোজ এবং বুস্টার ডোজ নিয়েছেন ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৭ জন।

এ পর্যন্ত সিনোব্যাকের টিকা নিয়েছেন ৫৭ লাখ ৭ হাজার ৫২৯ জন। এর মধ্যে ২৬ লাখ ৬৩ হাজার ২০২ জন প্রথম ডোজ, ২৬ লাখ ৬৪ হাজার ৮৫০ জন দ্বিতীয় ডোজ এবং ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৭ জনকে বুস্টার ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে।

এমইউ/এমকেআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।